
কক্সবাজারে দলিল নিবন্ধনে সম্প্রতি ধার্যকৃত বর্ধিত অতিরিক্ত উৎসকর (উৎসে কর) অবশেষে বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ১৫ সেপ্টেম্বর সদস্য এ.কে.এম বদিউল আলমের স্বাক্ষরে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এটি কার্যকর করেছেন।
গত ২৪ জুন জারি হওয়া প্রাথমিক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) এর অন্তর্গত ৮১টি মৌজার নির্দিষ্ট জমি ও আবাসিক সম্পত্তিতে অতিরিক্ত কর ধার্য করা হয়েছিল। নাল জমিতে প্রতি শতকে ২৫ হাজার এবং আবাসিক জমিতে ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত কর ধার্য করা হয়েছিল, যা সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদের জন্য অযৌক্তিক আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছিল।
বর্ধিত করের ফলে জেলা জুড়ে দলিল নিবন্ধন কার্যক্রম স্থবির হয়ে গিয়েছিল। জমি ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ একপ্রকার অসহায় হয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা রেজিস্ট্রার অফিস ১৩ আগস্ট মহা-পরিদর্শক (নিবন্ধন) এর বরাবরে স্পষ্টিকরণ ও পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন। ২০ আগস্ট এই বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অন্তর্গত মৌজা সমূহের দলিল নিবন্ধনে উৎসে কর বিধিমালা-২০২৩ অনুযায়ী ‘অন্য কোন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ এর আওতায় ৮১টি মৌজা ধরা হয়েছিল। কিন্তু ওই ৬৯০.৬৭ বর্গ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ ও অনুন্নত জমিতে করহার নির্ধারণ করা অযৌক্তিক ও বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই ছিল না। স্থানীয় সচেতন মহল, ভুক্তভোগী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়মিত মানববন্ধন, আবেদন ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে বর্ধিত কর বাতিলের দাবিতে সরব ছিলেন।
জেলা রেজিস্ট্রার কর্তৃপক্ষ জানায়, মূল বিধিমালায় ‘ক’ থেকে ‘চ’ শ্রেণিভুক্ত এলাকার জন্য বর্ধিত কর নির্ধারণের বিধি থাকা সত্ত্বেও, দীপাঞ্চলসহ বিস্তৃত মৌজাগুলিতে অতিরিক্ত কর ধার্য হওয়ায় দলিল নিবন্ধন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল। এতে রাজস্ব আদায়ও তুলনামূলকভাবে কম হয়েছিল।
সংশোধিত প্রজ্ঞাপনের ফলে কক্সবাজারের সাধারণ মানুষ আবার স্বস্তিতে এসেছে। জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আবুল হোছাইন বলেন, গত কয়েক মাসে বর্ধিত কর মানুষের জীবনযাত্রায় স্থবিরতা সৃষ্টি করেছিল। প্রজ্ঞাপন বাতিল হওয়ায় জমি ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া পুনরায় সচল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।
এবারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কউক এর অন্তর্গত মৌজা সমূহে উৎসে কর হার যথাযথ পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ এখন আর অযৌক্তিক অতিরিক্ত করের চাপ অনুভব করবেন না। এতে কক্সবাজারে জমি লেনদেন ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক পথে ফিরে এসেছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর