পাবনার চাটমোহরে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ রোধ করে অবৈধভাবে দেওয়া সোঁতি বাঁধ উচ্ছেদের দুই দিনের মাথায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা আবারও সোঁতি জাল স্থাপন করে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে এমন খবর পেয়ে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেই উপজেলার ধরমগাছা ব্রিজের নিচে গুমানী নদীর ছাওয়ালদহ এলাকায় দেওয়া সোঁতি বাঁধ আবারও উচ্ছেদ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী। এর আগে শনিবার বিকেলে একই জায়গায় সোঁতি বাঁধ উচ্ছেদ করেছিলেন ইউএনও।
জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষার পানিতে ভরে ওঠে চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন বিল ও নদ-নদী। এ সময় প্রচুর পরিমাণে মাছ থাকে নদীতে। বিল ও নদ-নদী থেকে পানি নামার সময় বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করে অবৈধভাবে সোঁতি বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে থাকেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এর নেপথ্যে থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এই জাল স্থাপনের ফলে বিল ও নদ-নদী থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় কৃষকরা সঠিক সময়ে ফসল লাগাতে পারেন না। শুধু তাই নয়, বাঁশ দিয়ে তৈরি বাঁধ সৃষ্টির ফলে নদীর দুপাশে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নদীপাড়ের দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। অন্যদিকে প্রকৃত জেলেরা মাছ শিকার করতে পারেন না। যে কারণে সরকারিভাবেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে সোঁতি বাঁধ স্থাপন।
তবে এবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কঠোর নজরদারির ফলে শনিবার বিকেলে উপজেলার ধরমগাছা এলাকায় গুমানী নদীতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দেওয়া সোঁতি বাঁধ উচ্ছেদ করা হয়। এতে এলাকার কৃষক, মৎস্যজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু দুই দিন না যেতেই আবারও সোঁতি বাঁধ স্থাপন করে মাছ শিকার করার সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আবারও পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সহযোগিতায় সেই সোঁতি বাঁধ উচ্ছেদ করেন ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার আব্দুল মতিন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, উচ্ছেদ করা সোঁতি বাঁধ পুনঃস্থাপন মানেই আইনের লঙ্ঘন। কৃষক, প্রকৃত মৎস্যজীবী বা নদীপাড়ে বসবাসকারী মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো বাঁধ নদীতে দিতে দেওয়া হবে না। যতো প্রভাবশালীই হোক না কেন, যতোবার সোঁতি জাল স্থাপন করবে, ততোবার কাটব।
সর্বশেষ খবর