আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনকে সামনে রেখে এক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তার জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রের 'সর্বশেষ অবস্থা' জানতে চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সব প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হলেও তাকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

তার মনোনয়নপত্রটি বৈধ হয়েছে নাকি অবৈধ হয়েছে, তাও জানানো হয়নি। এ বিষয়ে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

ভুক্তভোগী ওই প্রার্থীর নাম অ্যাডভোকেট মো: ওমর ফারুক। তিনি জেলা বিএনপির সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের চরশলাকিয়া এলাকায় তার ব্যক্তিগত চেম্বারে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মো: ওমর ফারুক অভিযোগ করে বলেন, "আগামী ২০ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলন। সম্মেলন সফল ও বাস্তবায়ন করার জন্য কেন্দ্র থেকে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময় অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করি এবং তা যথাসময়ে জমা প্রদান করি। তফসিল অনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, ১৪ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল এবং বাছাই, একই দিন বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ১৬ সেপ্টেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার, চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ এবং প্রতীক বরাদ্দের সময় ছিল। নির্বাচন কমিশন সব প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে প্রতীক বরাদ্দ দিলেও আমার বিষয়ে কোনো কিছু জানাননি। দুই দিন অপেক্ষার পর সশরীরে আমি নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি, মনোনয়নপত্রের বিষয়ে জানতে চেয়েছি; কিন্তু আমার মনোনয়নপত্র যদি বাতিল হয়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি আমাকে অফিসিয়াললি জানানোর কথা থাকলেও জানানো হয়নি। আমি বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।"

অ্যাডভোকেট মো: ওমর ফারুক বিগত ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রামে তার মাঠে থাকা এবং হাসিনা সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, "আমি দলের সক্রিয় একজন কর্মী। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাকে জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চাইছেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আমি আমার জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রের 'সর্বশেষ অবস্থা' জানার জন্য লিখিত একটি দরখাস্ত নিয়ে যাই নির্বাচন কমিশনের কাছে। তারা আমার দরখাস্তটি গ্রহণ করলেও রিসিভ কপি দেয়নি। আমাকে পরে আসতে বললেন। সম্মেলনের আর মাত্র ২ দিন বাকি। এই মুহূর্তে আমি কী করব বুঝতে পারছি না। দলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে জেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত নির্বাচন কমিশনের আচরণে আমি খুবই হতাশ।" সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপও কামনা করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি মো: খুরুম শেখ, হোসেনপুর পৌর সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মাসুদ পারভেজ নয়ন, কিশোরগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো: হুমায়ুন কবির, জিয়া সংসদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক মো: খায়রুল ইসলাম, শ্রমিক দলের প্রচার সম্পাদক ইসলাম মোল্লা, হোসেনপুর পৌর কৃষকদলের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ও ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান প্রমুখ।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, "ওমর ফারুক কোনো ইউনিটের কাউন্সিলর নন। কাউন্সিলর না হলে উনি প্রার্থী হতে পারেন না। যে কারণে ওমর ফারুকের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আমরা কেন্দ্রের নির্দেশের বাইরে তো আর কোনো কিছু করতে পারি না। প্রয়োজন হলে লিখিতভাবেও জানিয়ে দেওয়া হবে।"

সালাউদ্দিন/সাএ