• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৩ সেকেন্ড পূর্বে
আবু সাইদ
রৌমারি, কুডিগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:০৭ রাত

রৌমারীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর পচাঁ চাল জনতার হাতে আটক

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বৃহস্পতিবার দুপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পচা চালভর্তি দুটি কাকড়া গাড়ি জনতার হাতে আটক হয়েছে রৌমারী খাদ্য গুদামের সামনে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং জনগণ খাদ্য কর্মকর্তা শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।

স্থানীয় ও ডিলার সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের আনন্দ বাজার কেন্দ্রের ডিলার মনির হোসেন সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী রৌমারী খাদ্য গুদাম থেকে ৫৩৩ জন কার্ডধারীর জন্য প্রায় ১৬ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করেন। ডিলার মনির হোসেন পচা চালের বস্তাগুলো খাওয়ার অনুপযোগী বলে প্রতিবাদ জানালে খাদ্য কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ তাকে এবারের জন্য মানিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। নিরুপায় হয়ে ডিলার চালবোঝাই দুটি কাকড়া গাড়ি নিয়ে যাওয়ার পথে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জনতা গাড়ি দুটি আটক করে।

খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে রৌমারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদ, মঞ্জুরুল ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান পলামসহ জামায়াতে ইসলামের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। তারা বস্তায় পচা ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানানো হয়।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চালবোঝাই গাড়ি দুটি উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পচা চাল কেলেঙ্কারির নায়ক শহিদুল্লাহর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। অপরদিকে, অভিযোগ উঠেছে যে, পচা চাল কেলেঙ্কারির ঘটনার নায়ক খাদ্য গুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নানান ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।

উল্লেখ্য, রৌমারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ বহুল আলোচিত, বিতর্কিত, ঘুষবাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ এবং জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি খাদ্য গুদামের বিভিন্ন মিলার, ডিলার ও ঠিকাদারের কাছ থেকে নানা অজুহাতে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও স্বেচ্ছাচারিতা ও অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অপকর্মের চিত্র তুলে ধরে ৩৪ জন মিলার, ১৯ জন ঠিকাদার, কয়েকজন কৃষক এবং দুজন ব্যবসায়ী পৃথক পৃথকভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। চাতাল মালিক নাসির উদ্দিন লাল এবং ব্যবসায়ী নাহিদ হোসেন বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম কোর্টে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক, স্থানীয় ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গক্রমে, রৌমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৪৪টি ডিলারের আওতায় ২০ হাজার ২০২ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীর বিপরীতে ৬০৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ৩০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। চলতি মাসে রৌমারী খাদ্য গুদাম থেকে ডিলাররা চাল উত্তোলন করে বিতরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় অধিকাংশ কেন্দ্রে চাল পচা, নিম্নমানের ও খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় কার্ডধারীরা অভিযোগ জানালে প্রশাসনের নজরে আসে। গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদার খাদ্য গুদামসহ শৌলমারী ইউনিয়নের তিনটি ডিলার পয়েন্টে অভিযান চালান। এ সময় তিনি ডিলারদের কাছে নিম্নমানের ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল এবং ওজনে কম দেখতে পান। পরে ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহের পর রৌমারী বাজারে ময়নাল হক নামের এক ব্যবসায়ীর দুটি গুদাম সিলগালা করেন এবং একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার দুটি কাকড়া গাড়ি জনতার হাতে আটকের পর ওজনে কম ও নিম্নমানের চালসহ এ ঘটনার নায়কের চিত্র উন্মোচিত হলো।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে রৌমারীতে এমন অনিয়ম-দুর্নীতি চলে আসছে। আমি এত দিন শুধু শুনে গেছি। আজ হাতে নাতে ধরে দেখতে পেলাম খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ একজন দুর্নীতিবাজ। তার এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিকট তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।"

রৌমারী ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা শহিদুল্লাহর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হাসনাত মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, "আমার অজান্তে যোগদানের পর থেকে সে (শহিদুল্লাহ) এমন ব্যবসা করে যাচ্ছে। সে বদলি হয়েছেন।"

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, "আমি একাধিকবার তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে পাশ কাটিয়ে যান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।"

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com