
রুটি চুরির অভিযোগে যশোরের মনিরামপুরে নিজের ১৩ বছরের মেয়েকে শ্বাসরোধে করে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে দেন বাবা। আটকের পর এ ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন ঘাতক বাবা মাওলানা আয়নুল হক নিজে। বাবাকে আটকের পর নিহত মাহমুদা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে মণিরামপুর থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থানীয় একটি দোকান থেকে রুটি চুরির অভিযোগ ওঠে মাহমুদা সিদ্দিকা নামের ওই কিশোরীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি দোকানদার তার বাবা-মাকে জানালে, প্রথমে মায়ের হাতে জনসমক্ষে জুতা পেটা খায় মেয়েটি। পরে বাড়ি ফিরে বাবা আয়নুল হকও ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে তিনি গলা টিপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যায় মাহমুদা।
ঘটনা আড়াল করতে আয়নুল হক প্রথমে লাশ বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ের ঝোপে ফেলে রাখেন। পরে এশার নামাজ শেষে পুকুরে লাশ নিক্ষেপ করেন। তিনি এ সময় মেয়ের পায়জামা হাতে থেকে গেলে সেটি ওড়নার সঙ্গে পুকুরেই ফেলে দেন। ৯ সেপ্টেম্বর সকালে স্থানীয়রা রোহিতা বাজার সংলগ্ন ওই পুকুর থেকে বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। প্রাথমিক ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত উল্লেখ থাকায় মাহমুদার মা শাহিনুর আক্তার বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণের পর হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। ফলে মামলার ধর্ষণের ধারা বাদ যাবে। ঘটনার কিছুদিন পর থেকেই আয়নুল হক পলাতক ছিলেন। পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে বাদীকে থানায় ডেকে আনে এবং স্বামীকে হাজির করতে বলে। পরে স্ত্রী শাহিনুর আক্তার স্বামীকে বাড়িতে ডেকে আনেন এবং থানায় নিয়ে গেলে আয়নুল হককে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ জানায়, আয়নুল হক স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করে সংসার চালাতেন। তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মনিরামপুরের রোহিতা বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন। নিহত মাহমুদা ছিল তাদের মেজ মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর