
"জলাতঙ্ক নির্মূলে, কাজ করি সবাই মিলে" এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ রবিবার পঞ্চগড়ে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে কুকুর-বিড়ালের টিকা প্রদান কর্মসূচির আয়োজন করে।
সকালে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে আবার সেখানে এসে শেষ হয়। পরে জেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমন চন্দ্র দাস, সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান, জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. শহিদুল ইসলাম বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মরিয়ম রহমান। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল হালিম, দেবীগঞ্জ উপজেলা অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর, প্রবীণ গণমাধ্যমকর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদ, খামারি আব্দুর রহিম এবং ফারিন ফার্মেসি অ্যান্ড এনিমেল হেলথ এক্সপ্রেসের মালিক তৌহিদুল ইসলাম তুহিন। তিনি ভ্যাক্সিনেশনের জন্য বিনামূল্যে ২৫০টি টিকা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হোসেন।
বক্তারা বলেন, জলাতঙ্ক একটি মরণব্যাধি, যা প্রাণী থেকে মানুষে ও প্রাণীতে সংক্রমিত হতে পারে। কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি, শিয়াল কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে এ রোগটি সংক্রমিত হয়। বর্তমানে বিশ্বে বছরে ৫৯ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যায়। বিখ্যাত ফরাসি অণুজীববিদ লুই পাস্তুর ১৮৮৫ সালে সর্বপ্রথম জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কার করেছিলেন, যার মাধ্যমে রোগটি শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই অসামান্য অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর র্যাবিস কন্ট্রোল নামক সংস্থা কর্তৃক তার মৃত্যুদিবস ২৮ সেপ্টেম্বরকে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ রোগের ভয়াবহতা উপলব্ধি, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধ ও নির্মূলের লক্ষ্যে বাংলাদেশে ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হয়ে আসছে।
বক্তারা আরও বলেন, জলাতঙ্ক রোগ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কুকুর বা বিড়ালের কামড় ও আঁচড়ের মাধ্যমে এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বেজি, বাদুড় কামড় দিলে অথবা আঁচড়ে ক্ষত সৃষ্টি হলে দেরি না করে শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। মাস ডগ ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম, শেল্টার ও রেসকিউ সেন্টার, অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাক্ট ২০১৯ এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে হবে। পাশাপাশি কুকুরের প্রতি আমাদের মানসিকতা ও আচরণেও পরিবর্তন এবং এদের প্রতি মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা। সভায় বক্তারা জলাতঙ্ক নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও জলাতঙ্কমুক্ত দেশ গড়তে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর