মৌলভীবাজারের জুড়ীতে সাংবাদিক পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে ব্ল্যাকমেইলিং করে চাঁদা আদায়ের সময় গত ২২ সেপ্টেম্বর চাঁদার টাকাসহ গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা মাছুম আহমদের (৩৪) এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজারের ৬নং আমল গ্রহণকারী আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জুড়ী থানার এসআই ইউ এম ইমন। তবে চাঁদাবাজির মামলার ২নং আসামি জালালুর রহমান এখনো পলাতক রয়েছেন।

মাছুম উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর (আঞ্জুরী কোনা) গ্রামের বাসিন্দা। চাঁদাবাজির ঘটনায় জুড়ী শহরের রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আব্দুল বাসিত বাদী হয়ে সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি ও আদায়ের অভিযোগে দুজনকে আসামি করে জুড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অপর আসামি হলেন, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের খলিলুর রহমানের ছেলে জালালুর রহমান (৩০)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মাছুম এক সময় পেশাদার সিএনজি চালক হিসেবে কাজ করতেন। পরে এক নেতার সুবাদে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি পদ লাভ করেন। যুবলীগ নেতা হওয়ার পর মাছুম বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও সরকারি সুবিধা আদায়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

এছাড়া মাধ্যমিক পাস না করেও দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশন, এশিয়ান টিভির, স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পান মাছুম। এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি হওয়ার পর থেকে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে সরকারি অফিস, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নানা অফিসে চাঁদাবাজি শুরু করেন। মাছুম ও জালালুরের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন উপজেলার সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ। তাঁর গ্রেপ্তারের পর পুরো উপজেলার মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেন।

এছাড়া চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মাছুম ও চাঁদাবাজি মামলার অপর আসামি জালালুরের বিরুদ্ধে জুড়ী উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপক চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জুড়ী থানার এসআই ইউ এম ইমন বলেন, এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটনসহ আসামির জব্দকৃত মোবাইলে আরও চাঁদাবাজির আলামত থাকতে পারে। মূলত এজন্যই তাকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। এসময় তিনি আরও বলেন, চাঁদাবাজির মামলার ২নং আসামি জালালুরকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সালাউদ্দিন/সাএ