
নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের বুড়িখালি গ্রামের ইজিবাইক চালক আকবর ফকির (৬০) কে গলাকেটে ও পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত গ্রেপ্তার আসামির নাম বাবু সরদার (৫৯)। গত রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার মশাঘুনি এলাকার ব্র্যাক অফিসের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে সদর উপজেলার সড়াতলা গ্রামের মৃত মোসলেম সরদারের ছেলে।
আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার বাবু ফকির স্বীকারোক্তি মোতাবেক পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম জানান,‘জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, দীর্ঘদিন যাবত তার (অভিযুক্তের) স্ত্রীকে শারিরিক নির্যাতন, অভিযুক্তের শ্বাশুড়িকে (অভিযুক্তের বাড়িতে বেড়াতে এসে রাতে ভিকটিমের বাড়িতে ঘুমাতে গেলে) ধর্ষন চেষ্টা এবং অভিযুক্তের কন্যা ও পুত্রবধুর প্রতি ভিকটিমের কু-নজর ইত্যাদির কারনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আকবর ফকিরকে হত্যা করেছে বাবু সরদার।,
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম জানান,গত শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের বুড়িখালি গ্রামের একটি বাঁশবাগান থেকে সড়াতলা গ্রামের মৃত মোমিন উদ্দিন ফকিরের ছেলে আকবর ফকিরের গলাকাটা ও পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের হাত-পা গামছা দিয়ে বাঁধা ছিলো। তিনি পেশায় ইজিবাইক চালক ছিলেন। এ ঘটনার পরেদিন ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের ছেলে নাজির ফকির বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৮। ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজ হয়।
এরপর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে লোহাগড়া থানার মশাঘুনির ব্রাক অফিসের সামনের মহাসড়কের উপর হতে বাবু সরদারকে গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তারের পরে বাবু সরদার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে আকবার ফকিরকে জবাই করে সে হত্য করেছে। সে ঘটনার ১০ থেকে ১২ দিন পূর্ব থেকেই আকবার ফকিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে বলে জানায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে স্থানীয় বাজার থেকে একটি চাকু ও ফার্মেসি থেকে ২০টি অ্যালার্জির ট্যাবলেট কেনে। পরে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ওই ট্যাবলেট মিশিয়ে আকবর ফকিরকে পান করায়। আকবর অচেতন হয়ে পড়লে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে গলা কেটে হত্যা করে এবং পুরুষাঙ্গ কেটে পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।
দীর্ঘদিন যাবত তার (অভিযুক্তের) স্ত্রীকে শারিরিক নির্যাতন, অভিযুক্তের শ্বাশুড়িকে (অভিযুক্তের বাড়িতে বেড়াতে এসে রাতে ভিকটিমের বাড়িতে ঘুমাতে গেলে) ধর্ষন চেষ্টা এবং অভিযুক্তের কন্যা ও পুত্রবধুর প্রতি ভিকটিমের কু-নজর ইত্যাদির কারনে ভিকটিম আকবার ফকিরকে হত্যা করে এবং সে একাই উক্ত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে মর্মে স্বীকার করে। বাবু সরদার বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যিবধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম ও ডিবি ওসি আব্দুল খালেক।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর