
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) আবারো আধুনিকায়ন হচ্ছে। সার্জারি বিভাগ সহ বিভিন্ন পদে বিশেষজ্ঞ সার্জন না থাকায় অনেকদিন ধরে ওটি ব্যবহার করা যায়নি। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় অনেক যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ে। বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা নাদিম এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ওটিতে নতুন নতুন দরকারি যন্ত্রপাতি সংযোজন হচ্ছে। আইসোফ্লোরেন সহ নতুন এনেসথেসিয়া মেশিন, এলএডি অপারেশন থিয়েটার লাইট ও বাইপোলার ডায়াথারমি মেশিন এর মত আধুনিক চিকিৎসার যন্ত্রপাতি সংযোজিত হচ্ছে লামা হাসপাতালের ওটিতে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা নাদিম বলেন, ৫০ শয্যার লামা উপজেলা হাসপাতালে প্রতিদিন বহিঃবিভাগে তিন শতাধিক ও আন্তঃবিভাগে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞ সার্জন, ডাক্তার ও টেকনিক্যাল জনবল পদায়ন না থাকায় প্রত্যাশা অনুযায় চিকিৎসা সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। জনবল সংকটে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি থাকার পরেও সেবা দেয়া যাচ্ছেনা। ওটিতে কিছু সমস্যা ছিল, তার সমাধান হয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা হয়েছে। শীঘ্রই গাইনী বিশেষজ্ঞ সহ ডাক্তার ও টেকনিক্যাল জনবল পাবো আশা করছি। গত সপ্তাহে হাসপাতালে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে সোলার সিস্টেম লাগানো হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ না থাকলেও আলোকিত থাকবে হাসপাতাল। আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন এক্সরে মেশিন আসছে। আশা করি লামার মানুষকে ভালো স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারবো।
লামা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেসিয়া) ডাঃ নূর মোহাম্মদ বলেন, বিগত সময়ে আমরা লামা হাসপাতালের ওটিতে দেড় শতাধিক সিজার অপারেশন করেছি। সার্জারি ও গাইনী বিশেষজ্ঞ না থাকায় অনেকদিন যাবৎ সিজার অপারেশন বন্ধ আছে। নতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা যেভাবে চেষ্টা করছে আশা করি দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পাবো। আইসোফ্লোরেন সহ নতুন এনেসথেসিয়া মেশিন আসায় আরো ভালো কাজ করা যাবে। ২০২৩ সালে ভয়াবহ বন্যায় লামা হাসপাতালে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে যাচ্ছে আমরা।
জানা গেছে, অপারেশন থিয়েটার আধুনিকায় হওয়ায় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। এই সপ্তাহে লামা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের আধুনিকায়নের কাজ শেষ হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা নাদিম আরো জানান, অপারেশন থিয়েটারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও অপারেশনের নির্ধারিত চিকিৎসক না থাকায় অপারেশন চালু করা যাচ্ছিলো না। শীঘ্রই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ঘাটতিও পূরণ হবে। এখানে অপারেশন চালু হওয়ায় পাশবর্তী কয়েকটি উপজেলার রোগীরা এইখান থেকে বিনামূল্যে সেবা পাবেন।
বিগত সময়ে লামা হাসপাতালে সিজার অপারেশন হওয়া ফাতেমা বেগম এর স্বামী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেক গরিব মানুষ। দিনমজুরী করে সংসার চালাই। আমার স্ত্রীর সমস্যার কারণে নরমালে সন্তান না হওয়ায় এই হাসপাতালে বিনামূল্যে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতাল না হলে ঋণ নিয়ে বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে অপারেশন করাতে হতো।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর