
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক এবং নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশে যদি পিআর পদ্ধতি চালু হয় তবে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা স্বৈরাচার ও দুর্নীতিবাজ হয়ে পড়বে। এতে করে কোনো উন্নয়নই সম্ভব হবে না। মঙ্গলবার সকালে বাগাতিপাড়ার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও স্থানীয় বাজারে গণসংযোগ শেষে বিকেলে জামানগর বাজার চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
টিপু বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেশের মানুষ স্বাভাবিকভাবে ভোট দিতে পারেনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হলেও ষড়যন্ত্রকারীরা বারবার নানা কৌশলে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছে। একসময় আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার পরামর্শ দিয়েছিল প্রতিবেশী কিছু রাষ্ট্র। খুন-গুমের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল তারাই। সেই বুদ্ধির কারণেই আওয়ামী লীগের নেত্রীকে এ দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। এখন সেই শক্তিগুলো নতুন করে ‘পিআর পদ্ধতি’র নামে আরেকটি ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন টিপু। তিনি বলেন, “আপনি ভোট দেবেন লালপুরে, কিন্তু এমপি হবে মাদারীপুরে এ পদ্ধতি যদি চালু হয়, তবে বাংলাদেশের মানুষ কেন জীবন দিল, কেন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করল?”
বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা অভিযোগ করেন, ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে গৃহযুদ্ধ উসকে দিতে চায়, ইসলামকে বিভক্ত করতে চায়, কওমি মাদ্রাসা ও তাবলিগ জামাতকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সম্ভাব্য সমঝোতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “জামায়াত কাউকে ছাড় দেয় না। আপনারা মতিউর রহমান নিজামী থেকে শুরু করে অনেককেই ফাঁসি দিয়েছেন। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের কেউই রক্ষা পাবে না।” ভোটের রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করার কৌশল নিয়েও সতর্ক করেন তিনি। তার ভাষ্য, “কোনো প্রতীকে ভোট দিয়ে বেহেশতে যাওয়া সম্ভব নয়। বেহেশত একমাত্র আল্লাহই দিতে পারেন। অথচ এখন অনেক বাড়িতে গিয়ে মহিলাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা।”
নিজের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, বিগত সময়ে বারবার নির্যাতিত হয়েছেন তিনি, কিন্তু মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম থেকে পিছিয়ে যাননি। সমাবেশে তিনি স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন, “দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, আর আপনারা যদি আমাকে ভোট দেন, আর আল্লাহ যদি সহায় হন তবে আমি নাটোর-১ আসনে বিরাট পরিবর্তন আনতে চাই। উন্নয়নের মাধ্যমে বদলে দিতে চাই এই আসনকে।” তিনি আরও যোগ করেন, উন্নয়ন শুধু রাস্তা বা স্থাপনা নয়, মানুষের জীবনে পরিবর্তন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাই হবে তার অঙ্গীকার।
সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা নয়ন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র শরিফুল ইসলাম লেলিন, পৌর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম সরকারসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পুরো বাজার চত্বর কানায় কানায় ভরে ওঠে। নেতাকর্মীরা ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের পক্ষে স্লোগান দেন। টিপু সমাবেশ শেষে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর জন্য দোয়া কামনা করেন।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর