
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ভাউলাগঞ্জ দারুসসালাম নেসারিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আজিবুর রহমান ও তাঁর ছেলে সভাপতি মাহমুদ হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম এবং এমপিও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর এক ব্যক্তি এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের পর পূর্বের তারিখ দেখিয়ে এনটিআরসি নিবন্ধন ছাড়া প্রায় দশজন শিক্ষককে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মাসুদের সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ভুয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগকারী আরও জানান, মাসুদ ভুয়া সনদ তৈরির মূল কারিগর এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদ্রাসার মূল ভবনের নকশা পরিবর্তন করে শ্রেণিকক্ষের জানালা বন্ধ করে সড়কের ওপর দোকান নির্মাণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও মাদ্রাসার স্বার্থবিরোধী।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাবা ও ছেলে মিলে প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা শুরু করেছেন। সরকারি বিধিমালা সম্পূর্ণ পরিপন্থী উপায়ে অনিয়ম করে পাঁচজন কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে আরও পাঁচজন শিক্ষকের এমপিও অনুমোদনের জন্য পূর্বের নিয়োগ দেখিয়ে কাগজপত্র প্রেরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যেখানে সরকারি সময়সীমা ছিল চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই কর্মকাণ্ড পুরোপুরি বেআইনি ও শিক্ষানীতি বিরোধী। অভিযোগপত্রে দেবীগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সক্রিয় সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যার ফলে এসব বেআইনি কাজ রোধ করা যাচ্ছে না।
অভিযোগকারী মামুন মো. মাসুম বিল্লাহ সুষ্ঠু বিচার ও সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ছেলকে সভাপতি বানিয়েছেন অধ্যক্ষ বাবা। তাদের অনিয়মের শেষ নেই। এই ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসার সুনাম কেউ ক্ষুন্ন করুক সেটা আমরা চাই না। নিয়োগ বাণিজ্য ও বাবা ছেলের দুর্নীতির বিচার চাই, যাতে আর কেউ এসব করার সাহস না পায়।”
এ বিষয়ে ভাউলাগঞ্জ দারুসসালাম নেসারিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আজিবুর রহমান বলেন, “আমার ছেলের বিষয়ে আপনার আপত্তি কোথায়? আমি তো আপনার সব কথার উত্তর দিতে পারব না। একটা তদন্ত হচ্ছে সেটা হোক। ঠিক আছে ভাল থাকবেন।”
সম্প্রতি এই অভিযোগের তদন্তে মাদরাসাটি পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, “আমি দায়িত্ব পেয়ে তদন্তে গিয়েছিলাম। তাদের কাছে কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা অফিসার জড়িতের যে অভিযোগ করা হয়েছে তাও দেখা হচ্ছে। সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সর্বশেষ খবর