
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের ছোট ফুলবাড়ী এলাকায় কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন জাতের ধান (ব্রি ধান-১০৩) চাষ করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক রুহুল আমিন। তিনি ওই এলাকার ওসমান গনির ছেলে। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ৪৯ ধানের পরিবর্তে ১০৩ জাতের ধান রোপণ করলেও ফলন পাকা শুরুর আগেই ধানগুলো মাটিতে পড়ে যাওয়ায় হতাশ কৃষক পরিবার।
শেরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট ২২ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি ধান-৪৯ চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে এবং ১০৩ জাতের ধান চাষ হয়েছে ১৪০ হেক্টর জমিতে। বাকিগুলো অন্যান্য জাতের ধান।
ভুক্তভোগী কৃষক রুহুল আমিন জানান, তিনি প্রতি বছর জমিতে ব্রি ধান-৪৯ চাষ করতেন। এবার কৃষি অফিসে পরামর্শ নিতে গেলে কর্মকর্তা তাকে জানান, নতুন জাতের ১০৩ ধান এসেছে, এটি ৪৯-এর চেয়ে ভালো ফলন দেবে। রুহুল আমিন তখন জানতে চান, এই ধানটি কি ৪৯-এর মতো শক্ত থাকবে, নাকি পড়ে যাবে? জবাবে কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, না, এটি মাটিতে নুয়ে পড়বে না। সেই পরামর্শ অনুযায়ী তিনি এক বিঘা জমিতে ১০৩ জাতের ধান রোপণ করেন। কিন্তু দানা পাকা শুরু হতেই ধান গাছগুলো মাটিতে পড়ে যায়।
কৃষক রুহুল আমিনের বাবা ওসমান গনি বলেন, তিনি পাশের জমিতে আগের মতো ৪৯ ধান লাগিয়েছেন, সেটি ঠিক আছে। কিন্তু কৃষি অফিসের পরামর্শে ছেলে নতুন জাতের ধান লাগিয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। খরচ হয়েছে অনেক, কিন্তু ধান ঘরে তোলা মুশকিল। তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শ নিতে গিয়েই বিপদে পড়েছেন। লাভের আশায় গিয়েছিলেন, এখন ধানও নিতে পারবেন না।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, তিনি ওসমান গনিকে ৪৯ ধানের পরিবর্তে ১০৩ ধান চাষ করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তবে ধান পড়ে যাওয়ার কারণ তিনি নিশ্চিত নন। তাঁর মতে, জমিতে ইউরিয়া সার বেশি দিলে বা মাটির উর্বরতা বেশি হলে ধান পড়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা খাতুন বলেন, জমিতে গিয়ে দেখতে হবে ধানগুলো কেন পড়ে গেল। যদি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে তাকে প্রণোদনার আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
এদিকে স্থানীয় কৃষক সমাজের দাবি, নতুন জাতের ধান বাজারজাতের আগে মাঠপর্যায়ে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কৃষকদের এমন পরামর্শ দেওয়া উচিত নয়। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং কৃষি বিভাগের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর