
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ’ সংরক্ষণে কোস্ট গার্ডসহ প্রশাসনের তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সরকারের ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ভোলা উপকূলজুড়ে দিন-রাত টহল, অভিযান ও নজরদারি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সূত্রে জানা যায়, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন–১৯৫০ অনুযায়ী গত ৪ অক্টোবর থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ সময় কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের সদস্যরা উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী এলাকায় ২৪ ঘণ্টা টহল, গোয়েন্দা নজরদারি এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ ট্রলিং বোটের ব্যবহার কমে এসেছে, ফলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ধারাবাহিক অভিযান ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের ফলে ভবিষ্যতে মাছের প্রাচুর্য আরও বাড়বে বলে আশা করছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ ধরার অভিযোগে ভোলার লালমোহন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযান চালিয়ে ১৬ জেলেকে আটক করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে ৫ হাজার মিটার অবৈধ জাল ও ১৫ কেজি ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ জব্দ করা হয়।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১২ জেলেকে পাঁচ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড, এক জেলেকে এক হাজার টাকা জরিমানা এবং তিন অপ্রাপ্তবয়স্ক জেলেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহ আজিজ। এ সময় জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস এবং মাছ স্থানীয় মাদরাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জেলেদের ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ থাকবে, সব বরফকল ও ড্রেজার কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় ভোলা জেলায় প্রশাসন, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী, মৎস্য বিভাগ ও নৌপুলিশের সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর