
চার দিন ধরে নিখোঁজ বিকাশ কর্মী ওমর ফারুককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের দাবি, জমি বিরোধের জেরে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। বুধবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের আখড়া ব্রিজ সংলগ্ন চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই অভিযোগ তুলেছেন তাঁর স্বজনেরা। পরিবার অভিযোগ করেছে, পুলিশ মামলা না নিয়ে গড়িমসি করছে এবং ওমর ফারুকের কিছু হলে তার দায় প্রশাসনের ওপর বর্তাবে। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ওমর ফারুকের বাবা জসিম উদ্দিন কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
যশোদল ইউনিয়নের মধুনগর গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে (৩১) ওমর ফারুক কিশোরগঞ্জ শহরে একটি বিকাশ অফিসে কর্মরত ছিলেন। মানববন্ধনে গ্রামের বহু মানুষ অংশ নেন।
সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে বিকাশ অফিসে যান ওমর ফারুক। অফিসে কিছু সময় থাকার পর সাড়ে ১০টার দিকে তিনি বের হন। এরপর বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি বাসায় ফেরেন এবং বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে আবারও অফিসের কাজে বাইরে যান। কিন্তু রাত সাড়ে ৮টায় তাঁর অফিস থেকে ফোন করে পরিবারকে জানানো হয় যে তিনি অফিসে উপস্থিত হননি। এরপর থেকে ওমর ফারুককে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মানববন্ধনে ওমর ফারুকের ছোট ভাই মোশাররফ হোসেন রনি বলেন, "প্রথমত জানতাম আমার ভাই নিখোঁজ হয়েছে, কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) রাত তিনটায় মুক্তিপণের দাবিতে একটি ফোনকল আসে। পরবর্তীতে তাদের আর কল আসেনি। আমাদের ধারণা, আমার ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত ঝামেলায় বিরোধের কারণে আমরা নিশ্চিত যে আমার ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। থানায় বারবার শরণাপন্ন হলেও আমাদের এটা-সেটা বুঝিয়ে কার্যক্রমকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। আমি দ্রুত আমার ভাইয়ের খোঁজ চাই এবং যারা অপহরণ করেছেন তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।"
মানববন্ধনে উপস্থিত ওমর ফারুকের মেয়ে ফারজানা আবেগাপ্লুত হয়ে বলে, "বাবা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলাম মজা এনো। আমার বাবাকে ফিরিয়ে এনে দিন।" তাঁর স্ত্রী ফাহমিদা বলেন, "আমার দুটো বাচ্চা আছে। আপনারা আমার স্বামীর খোঁজ করে দিন।"
বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর এহতেশামুল হুদা মুনাব্বী জানান, "সে আমাদেরই কর্মী। অফিস থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে বের হয়। এরপর থেকেই আমাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। পুলিশও আমাদের কাছে তদন্তে এসেছিল, আমরা তদন্তে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।"
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "ওমর ফারুক বিকাশে চাকরি করতেন। তিনি রেলস্টেশন এলাকা থেকে পৌনে ৫ লাখ টাকা তোলেন। তারপর থেকে ফারুকের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অফিসেও যাননি। আমরা কাজ করছি। ওমর ফারুকের বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত চলমান। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর