• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:৪০ রাত

আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ঢুকতে পারেননি নারী সাংবাদিকরা, নজিরবিহীন বিতর্ক

ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বৃহস্পতিবার ভারতে এক সপ্তাহের সফরে পৌঁছেছেন। পরদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন আমির খান মুত্তাকি।

শুক্রবার সেই বৈঠকের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই দেখা যায়— আফগান দূতাবাসে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত সবাই পুরুষ সাংবাদিক। একজন নারী সাংবাদিকও সেখানে নেই। অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রেস কনফারেন্সে কোনো নারী সাংবাদিককেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কয়েকজন ঢুকতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। এ সিদ্ধান্তে ভারতজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনের কিছুক্ষণ পরেই, অনেক সাংবাদিক সোশাল মিডিয়ায় তাদের ক্ষোভ উগরে দেন। উল্লেখ করেন যে, সব নারী সাংবাদিক পোশাকবিধি মেনে চললেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি সাংবাদিক বৈঠকে, যা লিঙ্গবৈষম্যমূলক।

নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া নিয়ে ভারতীয় সংসদের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও অন্যান্য অনেকেই কড়া সমালোচনা করেন। কিন্তু ঘটনার পর ভারত সরকার জানায়, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকির বৈঠকের অনুষ্ঠানে সরকারের কোনো ভূমিকা ছিল না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংবাদ বৈঠকে আমন্ত্রণপত্র মুম্বইতে আফগানিস্তানের কনসাল জেনারেলের নির্বাচিত সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এইসব সাংবাদিকরা আফগান মন্ত্রীর সফরের জন্য দিল্লিতে অবস্থান করছিলেন। আফগান দূতাবাস এলাকা ভারত সরকারের এখতিয়ারভুক্ত নয়।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘মি. মোদি, যখন আপনি একটি পাবলিক ফোরাম থেকে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়ার অনুমতি দেন, তখন আপনি ভারতের প্রতিটি নারীকে বার্তা দিচ্ছেন যে, আপনি তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য খুব দুর্বল।’ 

নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নারী শক্তি স্লোগানের সমালোচনা করে বিরোধী দলনেতা আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে, প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের সমান অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে। এ ধরনের বৈষম্যের মুখে আপনার নীরবতা নারী শক্তি সম্পর্কে আপনার স্লোগানের শূন্যতাকে প্রকাশ করে।’ 

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও এক্সে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ট্যাগ করে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি, ভারত সফরে তালিবান প্রতিনিধির সাংবাদিক সম্মেলন থেকে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়ার বিষয়ে আপনার অবস্থান স্পষ্ট করুন।’ 

সাবেক কেন্দ্রীয়মন্ত্রী পি চিদাম্বরমের মতে, ‘পুরুষ সাংবাদিকরা যখন জানতে পেরেছিলেন যে অনুষ্ঠানে নারীদে প্রবেশাধিকার নেই; তখন তাদের আফগানমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করা উচিত ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি হতবাক যে, আফগানিস্তানের মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সংবাদ বৈঠক থেকে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া হয়েছিল।’ 

তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি মহুয়া মৈত্রও সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের প্রতিটি নারীর সম্মানহানি করেছে। তালেবান মন্ত্রীকে নারী সাংবাদিকদের বাদ দিতে অনুমতি দিয়ে একেবারে মেরুদণ্ডহীনতার প্রমাণ দিল কেন্দ্র।’

সংবাদমাধ্যমের কর্মী পৌলমী সাহা এক্স হ্যান্ডলেতে লেখেন, ‘কেন তালেবান সরকার ভারতের মাটিতে সংবাদ সম্মেলন করার অনুমতি পাচ্ছে; যেখানে দেশের নারী সাংবাদিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় এবং তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না?’ 

সাংবাদিক সুহাসিনী হায়দার লিখেছেন, ‘এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তালেবান তাদের দেশে নারীদের প্রতি ঘৃণ্য আচরণ করে, লিঙ্গ বৈষম্যকে মান্যতা দেয়। তাদের সেই চিন্তাধারাকে ভারতেও কাজে লাগানোর জায়গা করে দিল সরকার। এই ঘটনাকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

সাংবাদিক বরখা দত্ত এক্স হ্যান্ডলেতে লেখেন, ‘আজ তালেবান সরকারের মন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে নারী সাংবাদিকদের ডাকা হয়নি।…অবশ্যই ওই সম্মেলনে উপস্থিত পুরুষ সাংবাদিকরা তালিবানদের এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারতেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, ওদের দূতাবাসের বাইরে সাংবাদিক বৈঠক করার জন্য সরকারের চাপ দেওয়া উচিত ছিল। তাতে প্রত্যেকে সমান সুযোগ পেতেন।’

আফগানিস্তানে নারীর অধিকার সব দিক থেকে খর্ব করা হয়েছে। কিন্তু ভারতের মাটিতে এমন বৈষম্য কেন! প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আফগানিস্তানে মহিলাদের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। মেয়েদের স্কুল ও কলেজে যাওয়া বন্ধ, কর্মক্ষেত্র থেকে মহিলাদের বাদ দেওয়া— এমনই নারীবিদ্বেষী নীতির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে আগেই সমালোচিত হয়েছে তালেবান। জুলাই মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জও এই নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

২০২১ সালে আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এটাই মুত্তাকির প্রথম ভারত সফর। কিন্তু সফরের শুরুতেই নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া নিয়ে যে আন্তর্জাতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বড় প্রশ্ন তুলে দিল অনেকের মত। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অবশ্য মনে করে, এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো আঁচ পড়বে না।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]