
তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আবারও জেগে উঠেছে উত্তরাঞ্চল। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচই’ স্লোগানে অংশ হিসেবে শনিবার (তারিখ) সন্ধ্যায় লালমনিরহাটসহ রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলায় একযোগে ১১টি পয়েন্টে মশাল প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়।
লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক, সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, তিস্তা শুধু উত্তরাঞ্চলের নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে। জনগণ এখন তিস্তার ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমেছে। তিনি আরও বলেন, তিস্তা সমস্যা কোনো স্থানীয় ইস্যু নয় এটি একটি জাতীয় সমস্যা। দীর্ঘ ষোল বছর এক ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন রংপুরের মানুষের বুকের ভিতরে জগদ্দল পাথরের মতো বসিয়ে দিয়েছে, তবুও আমাদের কান্না থামেনি।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করে দুলু বলেন, সরকারের ধীরগতির কারণে তিস্তার জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিপক্ষে যারা দাঁড়াবে, তারা জাতীয় শত্রুতে পরিণত হবেন।
তিনি সরকারকে নভেম্বরে মধ্যেই মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার আহ্বান জানান। সময়মতো কাজ শুরু না হলে রংপুরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো রংপুর অঞ্চল অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন আন্দোলনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা জানান, গত কয়েক মাসে তিস্তা নদীর ভাঙন ও চর জেগে ওঠার ফলে লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও পরিবেশগত ক্ষতির কারণে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এর আগে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর পক্ষ থেকে লালমনিরহাটে গণমিছিল, গণসমাবেশ, পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদানসহ একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিনের অবহেলায় তিস্তার বুকে অসংখ্য চর জেগে উঠছে, ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি, ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
শনিবারের কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, ছাত্র ও যুব সমাজের নেতাকর্মীরা। তাদের মুখে এক স্লোগান " জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই"।
তিস্তা রক্ষায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ না হলে তারা বৃহত্তর রাজনৈতিক আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর