
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভার সাইডলাইনে একাধিক বৈঠকে অংশ নিয়ে পাচার করা টাকা ফেরাতে ও অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় তহবিল বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো শর্তে আর বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হবে না। কারণ, আগের সরকারের রেখে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সফলভাবে মোকাবিলা করে বর্তমানে রিজার্ভের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এবং বাজারে ডলারের জোগানও বেড়েছে।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই বৈঠক শনিবার শেষ হবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, যিনি পুরো বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিবসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (মার্কিন সময়) দুপুরে আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল জলবায়ু ক্ষতির জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ জানায়, তবে শর্ত শিথিল রাখার আহ্বান জানায়।
আইএমএফ রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, সরকারি ঋণ গ্রহণে সুদের হার বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা এবং জ্বালানি উপকরণের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার পরামর্শ দিয়েছে। এসব বিষয়ে আগামী ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আইএমএফের মিশন আসবে, যারা ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে।
একই দিনে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এ ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকে। ইতোমধ্যে এসব সংস্থার সহায়তায় পাচারকৃত অর্থের একটি অংশ শনাক্ত করা হয়েছে, যা ফেরাতে এখন বাড়তি সহায়তা প্রয়োজন।
গত জুলাই থেকে বিশ্বব্যাংক সহজ শর্তের নতুন ঋণ কর্মসূচি চালু করেছে, যার সুদের হার প্রচলিত ঋণের তুলনায় কম। এ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ অতিরিক্ত ঋণ সহযোগিতা চেয়েছে।
ওপেক ফান্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ জ্বালানি আমদানির জন্য ক্রেডিট লাইন বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে, ফলে এই খাতে ঋণের চাহিদা বেড়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এডিবি, এআইআইবি ও জাইকার সঙ্গেও একাধিক বৈঠক করেছে, যেখানে উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতা বাড়ানো ও চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে সমর্থন চাওয়া হয়।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর