
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে এক শ্রমিক পরিবারের স্বপ্ন মুহূর্তেই ছাই হয়ে গেছে। আগুনে পুড়ে মারা গেছে একটি ষাঁড় গরু ও পাঁচটি ছাগল। সেই দৃশ্যের শোকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন পরিবারের বৃদ্ধা মমতাজ বেগম (৭০)। শনিবার দুপুরে পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া মহল্লায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
নিহত মমতাজ বেগম পৌর এলাকার মৃত আবেদ আলীর স্ত্রী। আর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক নির্মাণ শ্রমিক সাধন আলী তারই নাতি। হঠাৎ আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে সাধনের গোয়ালঘর, রান্নাঘর ও ঘরের আসবাবপত্র সব। স্থানীয়রা জানান, দুপুরে সাধনের স্ত্রী লিজা বেগম ও মা অলকা বেগম রান্নাঘরে রান্না করছিলেন। কিছুক্ষণের জন্য বাইরে গেলে রান্নার চুলার আগুন পাশের শুকনো খড়িতে লেগে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে গোয়ালঘরে। আগুনের লেলিহান শিখায় মুহূর্তেই পুড়ে যায় একটি ষাঁড় গরু ও পাঁচটি ছাগল। গুরুতর দগ্ধ আরেকটি ছাগলকে পরে জবাই করতে হয়। এই দৃশ্য চোখে দেখে মমতাজ বেগম জ্ঞান হারান। পরিবারের লোকজন তাঁকে দ্রুত বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
দয়ারামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ ফজলুর রহমান বলেন, "খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রান্নার চুলার আগুন থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত।" এই ঘটনায় সাধনের প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মারুফ আফজাল রাজন বলেন, "ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।" অগ্নিকাণ্ডের পর এখন সাধনদের বাড়িতে শুধু ধোঁয়া আর কান্নার গন্ধ। পোড়া গরু-ছাগলের দগ্ধ দেহ আর মমতাজ বেগমের নিথর মুখ একসঙ্গে যেন বলে যায় এক পরিবারের নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার গল্প।
সর্বশেষ খবর