
নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌরসভার দক্ষিণ মুরাদপুর এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে সড়ক সংস্কারের কাজ। রাস্তার মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও স্টে-ওয়ার রেখে দেওয়ায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হলেও এতে কোনো সমন্বয়, পরিকল্পনা বা দায়িত্বশীলতার অভাব স্পষ্ট।
পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দক্ষিণ মুরাদপুর এলাকায় বায়েজিদের দোকান থেকে শাহিন আলমের জমি পর্যন্ত ৫৭০ মিটার রাস্তা পাকা করার কাজ চলছে। প্রায় ৩৮ লাখ টাকার এ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাটোরের "আরাবি কনস্ট্রাকশন"। স্থানীয়দের মতে, কাজ শুরুর আগে বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে পৌরসভার সমন্বয় করা হলে এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতো না। বর্তমানে রাস্তার মাঝখানে খুঁটি ও টানার তার রেখে কাজ চলায় পথচারী, মোটরসাইকেল আরোহী ও ছোট যানবাহনের চালকরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
দক্ষিণ মুরাদপুর এলাকার ব্যবসায়ী বায়েজিদ হোসেন বলেন, "রাস্তা হচ্ছে, এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু মাঝখানে টানার তার রেখে দেওয়াটা ভয়ংকর ভুল। রাতে আলো কম থাকলে মানুষ বা গাড়ি সেটা দেখতে না পেয়ে বিপদে পড়তে পারে। পাশে যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও তারা কেন রাস্তার মাঝখানেই তার রেখেছে, তা আমাদের বুঝে আসে না।" আরেক স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন আলী বলেন, "এটা একেবারে অপরিকল্পিত কাজ। রাস্তা করার আগে বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি। কালভার্ট নির্মাণের কথাও ছিল, সেটাও করা হয়নি। এইভাবে উন্নয়ন কাজ করলে জনগণের উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।"
অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় ঠিকাদার সুজন আলী বলেন, "রাস্তার পাশের এক বাড়ির মালিক রাস্তা সোজা না রেখে জোর করে একটু সরিয়ে দিতে বাধ্য করেছেন। এতে করে খুঁটির টানার তারটা রাস্তার মধ্যে পড়ে গেছে। এখন রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করতে গিয়ে আমাদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে।"
পৌরসভার প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, "দক্ষিণ মুরাদপুর এলাকায় ৫৭০ মিটার রাস্তার কাজ চলমান। একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ও একটি টানার তার রাস্তার মধ্যে পড়েছে। বিষয়টি বিদ্যুৎ অফিসকে জানানো হয়েছে। খুব শিগগিরই খুঁটি ও টানার তার অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে।"
অন্যদিকে বাগাতিপাড়া বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম (ওঅ্যান্ডএম) মোমিনুল ইসলাম বলেন, "এ বিষয়ে আমাদের জানানো হয়নি। পৌরসভা থেকে লিখিতভাবে আবেদন করলে নিয়ম অনুযায়ী আমরা খুঁটি ও টানার তার অপসারণ করব।"
বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক মারুফ আফজাল রাজন বলেন, "বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। খুঁটি ও টানার তার সরানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগিরই অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
স্থানীয়দের দাবি, রাস্তা উন্নয়নের আগে পৌরসভা, বিদ্যুৎ অফিস ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় না থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনাপ্রবণ পরিস্থিতি বারবার তৈরি হবে। তাঁরা দ্রুত খুঁটি ও টানার তার সরিয়ে রাস্তা চলাচল উপযোগী করার দাবিও জানিয়েছেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর