
কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় অপহরণের পর সহোদর দুই শিশুকে হত্যার ঘটনায় আলোচিত মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক আবদুল গণি এ রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ নয় বছরের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এ রায় ঘোষণা হলে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত নিহত শিশুদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আব্দু শুক্কুর, আলমগীর হোসেন (প্রকাশ বুলু), মিজানুর রহমান, মো. শহীদুল্লাহ।
এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আবদুল মজিদ, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা ও লায়লা বেগম।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকেলে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ ফোরকানের দুই ছেলে- মোহাম্মদ হাসান শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ হোছাইন কাজল (৮)- পাড়ার পাশের মাঠে খেলতে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।
পরদিন সন্ধ্যায় তাদের বাবার কাছে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। অপহরণকারীরা চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরিবার মুক্তিপণ না দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে ক্ষুব্ধ অপহরণকারীরা দুই শিশুকে হত্যা করে। তিন দিন পর ২০ জানুয়ারি গর্জনিয়া খাল থেকে দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহত শিশুদের পিতা মোহাম্মদ ফোরকান বাদী হয়ে রামু থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
রায়ের পর নিহত শিশুদের পিতা মোহাম্মদ ফোরকান সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও আমি সন্তানের হত্যার ন্যায়বিচার পেয়েছি। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করি দ্রুত রায় কার্যকর হবে।
স্থানীয়রা বলেন, দুই ভাইয়ের হত্যার ঘটনায় রামুতে একসময় শোকের ছায়া নেমেছিল। আজকের রায়ে কিছুটা হলেও সেই শোকের ভার হালকা হলো।
অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট মীর মোশাররফ হোসেন টিটু বলেন, এটি ছিল একটি নৃশংস ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এই রায়ের মাধ্যমে অপরাধীরা যে আইনের হাত থেকে রক্ষা পায় না- তা প্রমাণিত হলো।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর