
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডডিটে নারী সহপাঠীকে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি ও নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের দাবিতে রাতেই বিক্ষোভ শুরু হয় ক্যাম্পাসে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুয়েট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসংলগ্ন ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর (ডিএসডব্লিউ) ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম শ্রীশান্ত রায়, যিনি বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল (ইইই) বিভাগের ২১ ব্যাচের ছাত্র এবং আহসানউল্লাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানান, রেডডিটে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটে দেখা যায়, শ্রীশান্ত রায় নিজেই নারী সহপাঠীকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন এবং বোরকা, হিজাব ও নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছেন। “এমন একজন আমাদের সহপাঠী হতে পারে না। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কার ও ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার দাবি করছি,” — বলেন এক বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, রেডডিট ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্তে বেশ কিছু প্রমাণ মিলে গেছে —
ওই ব্যবহারকারী নিজেকে ‘বুয়েট ইইই-২১’-এর শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
একাধিক মন্তব্যে বাসইউস ব্র্যান্ডের ইয়ারবাড ব্যবহারের কথা বলেছেন — যা শ্রীশান্ত রায়েরও ব্যবহৃত।
রেডডিট আইডিতে নেপালের মুসটাং ভ্রমণের উল্লেখ আছে — একই সময় (৩ জুন) শ্রীশান্ত তার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসটাং সফরের ছবি পোস্ট করেন।
মন্তব্যগুলোর ভাষা ও লেখনশৈলী তার পরিচিত সহপাঠীদের কাছে অভিযুক্তের স্বভাবগত ভঙ্গির সঙ্গে মিলে।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের রাজনীতি-বর্জনের ঘোষণায় তিনি একমাত্র স্বাক্ষর করেননি — যা তার নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এই সব তথ্যের ভিত্তিতে সহপাঠীরা শ্রীশান্ত রায়কেই উক্ত রেডডিট ব্যবহারকারী বলে সন্দেহ করছেন। তারা সম্ভাব্য ভুক্তভোগীদের এগিয়ে এসে প্রমাণ শেয়ার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সাময়িক বহিষ্কারাদেশ জারি
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাতেই ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে শ্রীশান্ত রায়ের ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিলের ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় (আইডি: ২১০৬১৬৯)-এর ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করা হলো।”
ড. মাসুদ আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা হবে। এছাড়া স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে আগামীকাল বুয়েট উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা হবে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর