শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে গভীর নলকূপের বরিং করতে গিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
এখন ওই নলকূপের বোরিং এর পাইপ দিয়ে অনবরত বেরিয়ে আসছে গ্যাস। আর সেই গ্যাসেই চলছে গ্রামের মানুষের রান্নাবান্নার কাজ। এতে একদিকে যেমন উচ্ছসিত স্থানীয়রা। অন্যদিকে এ নিয়ে তাদের মাঝে রয়েছে শঙ্কা।
কারণ যে কোনো মুহূর্তে এখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। তারা দ্রুত এই গ্যাসের সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সুত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার রূপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া মধ্যপাড়া গ্রামের শ্রমিক নূর মোহাম্মদের নিজ বাড়ির তিনটি স্থানে গভীর নলকূপ বসানোর জন্য মিস্ত্রি দিয়ে বরিং করার কাজ শুরু করেন। আর ওই বরিং করতে গিয়েই মিলে যায় প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান। তবে এটি কোন প্রকারের গ্যাস এবং এর সম্ভাবনা কতটুকু এ বিষয়ে কেউ কিছু জানেন না।
বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদ জানান, গত ১৪ অক্টোবর সকালে মিস্ত্রী দিয়ে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর জন্য দেড় ইঞ্চি পাইপ দিয়ে বোরিং করতে যান। এ সময় ৫৫ ফুট মাটির গভীরে পাইপ বসানোর পর হঠাৎ করে পাইপ উপড়ের দিকে উঠে আসতে থাকে। একইসাথে অনবরত গ্যাস বের হতে থাকে। এরপর বাড়ির অন্য পাশে আরও দুই জায়গায় ৪৫ ও ৪০ ফুট বরিং করলেও সেখানে একি অবস্থার পর বের হতে থাকে গ্যাস।
পরে মিস্ত্রিরা দুটি বোরিং এর গর্ত মাটি চাপা দিয়ে রাখলেও এখনো একটি বরিং দিয়ে অনবরত গ্যাস বের হচ্ছে। আর এই গ্যাস দিয়েই টানা ১০ দিন ধরে নিজের পরিবারসহ প্রতিবেশীদের রান্নার কাজ চলছে। তিনি বলেন, মাটির নিচে কী পরিমাণ গ্যাস আছে সেটাতো বোঝা যাচ্ছে না। এজন্য সরকারিভাবে সংশ্লিষ্ট লোকজন আসা দরকার। পরে যদি কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তো আমাদের বিপদ হতে পারে। এদিকে, বর্তমানে এই গ্যাসের উৎস নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। তারা চান দ্রুত অনুসন্ধান করে নিশ্চিত করা হোক মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা গ্যাসের সম্ভাবনা কতটা।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. হাকিম মিয়া বলেন, এই এলাকার মাটির নিচে অনেক প্রাকৃতিক গ্যাস আছে। কারণ, তিনটি জায়গা বোরিং করার সময়ই গ্যাস বের হইছে। তাই সরকারি লোকজন এসে এখানে দেখুক কতটুকু গ্যাস মজুদ আছে। এগুলো উত্তোলন করা যায় কিনা।
রূপনারায়নকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হযরত আলী বলেন, গ্যাস বের হওয়ার খবর শোনার পর ঘটনাস্থলে এসে তার সত্যতা পেয়েছি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করে ভিডিও পাঠিয়েছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। কখন কী হয় তা বুঝা মুশকিল। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারিভাবে এর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ একটু আগুন দিলে হুহু করে গ্যাস বের হতে থাকে। আবার ফুঁ দিলেই আগুন নিভে যায়।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, মাটির নিচ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এরইমধ্যে গ্যাস বেরুনোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর