কুমিল্লার চান্দিনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা উত্তর জেলা আয়োজিত গণমিছিলে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
কুমিল্লা-৭ আসন থেকে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অপর প্রার্থীর নেতা-কর্মীদের মাঝে ওই ঘটনা ঘটে। এতে কোন নেতা-কর্মী গুরুতর আঘাত না পেলেও হাতা-হাতি ও ধ্বস্তা-ধস্তির ঘটনা ঘটে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাস স্টেশন এলাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে পাঁচ দফা দাবীতে গণমিছিলে ওই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষ দর্শী সূত্রে জানা যায়- পাঁচ দফা দাবীতে গণমিছিলের শেষ পর্যায়ে জামায়াতে ইসলামীর চান্দিনা উপজেলার নায়েবে আমীর ও জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মোশাররফ হোসেন বক্তৃতা করার সময় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে জামায়াত ও শিবিরের অপর একটি গ্রুপ। তারা জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থীর হাত থেকে মাইক্রো ফোন কেড়ে নেয়। এ সময় কয়েকজন নেতা-কর্মী “দল বিক্রি চলবে না, আওয়ামী দোসর প্রার্থী মানি না” স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জামায়াতে ইসলামী চান্দিনা আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকের উল্লাহ সমর্থিত বলে জানা গেছে। দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনায় মুহুর্তেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। এসময় নেতাকর্মীরা জেলা আমীর আব্দুল মতিন ও জেলা সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সংগঠনটির নেতাকর্মীরা জানায়- কুমিল্লা-৭ চান্দিনা আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নেতাকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিল। তাদের অভিযোগ এমপি প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সংগঠনের নিয়ম না মেনে ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে উত্তর জেলা সিন্ডিকেট করে মাওলানা মোশাররফকে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করে। চান্দিনা উপজেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি সাজিদ আল আমিন সোহাগ বলেন- জেলা আমীর মতিন ও সেক্রেটারি শহীদ টাকা খেয়ে মোশাররফকে প্রার্থী ঘোষণা করে। সে আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রাণ গোপালের সাথে উঠান বৈঠক করেছে, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তপন বকসীর সাথে বৈঠক করেছে। জেলা সংগঠন একজন আওয়ামীলীগের দালালকে জামায়াতের মাধ্যমে নরমালাইজ করতেছে। এ ব্যপারে চান্দিনা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাও. মিজানুর রহমান জানান- প্রার্থী মনোয়ন করতে সম্পূর্ণ সাংগঠনিক প্রক্রিয়াতেই করা হয়েছে।
বেশ কয়েক দিন যাবৎ মোস্তফা শাকের উল্লাহ সমর্থিত নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। আজ (সোমবার) গণমিছিলে তা প্রকাশ পেয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে দ্রুত আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। জামায়াতে ইসলামীর চান্দিনা উপজেলার নায়েবে আমীর ও জামায়াত মনোনীত মাওলানা মোশাররফ হোসেন বলেন- দলীয় নেতা-কর্মীরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। যার পক্ষে মিছিল হচ্ছে, অন্য পক্ষ তার বিরুদ্ধে মাঠে আছে। আমি কোনো রাজনৈতিক আপস করিনি। স্থানীয় উন্নয়নমূলক আলোচনায় অংশ নেওয়াকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কারণ আমি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, যে দলই ক্ষমতায় আসুক দাওয়াত দিলে আমাকে সেখানে যেতে হয়। তাছাড়া উন্নয়নমূলক কাজে আমাকে অংশ নিতেই আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ছবি উঠেছে। অর্থের বিনিময়ে মনোয়ন দেয়ার ব্যাপার অস্বীকার করে কুমিল্লা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুল মতিন বলেন- এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম- তাদের দুই পক্ষের মাঝে হাতাহাতি ঘটলেও তাদের নেতা-কর্মীরাই তার নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর