একমাত্র ছেলে ইমরান মিয়া (১১) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। চোখের সামনে সন্তানের কষ্ট দেখেও অর্থের অভাবে কিছুই করতে পারছেন না পিতা ইয়াকুব মিয়া। যা কিছু অর্থ ছিল তা দিয়ে ছেলে চিকিৎসা করিয়েছেন।
চিকিৎসাকরা জানিয়েছে ইমরানের চিকিৎসার জন্য আরও প্রায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সেলুনকর্মী ইয়াকুব মিয়ার পক্ষে এই বিপুল অর্থ জোগাড় করা অসম্ভব। সুস্থ ছেলেটি দিন দিন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিছইু করতে পারছেন তিনি। নিরুপায় হয়ে ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের কাছে সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন দরিদ্র পিতা। ইয়াকুব মিয়ার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আনন্দপুর পশ্চিমপাড়া। ইমরান মিয়া ৫ম শ্রেণীর ছাত্র।
ইয়াকুব মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অসুস্থ ইমরান বিছানায় শুয়ে আছে। খালি শরীর। শরীরটা অনেকটা শুকিয়ে গেছে। বুকের হাড়গুলো যেন বেরিয়ে আসছে। চোখ দুটো মেলে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
ইয়াকুব মিয়া বলেন, দেড় মাস আগে একদিন বিকেলে খেলার মাঠ থেকে ফিরে এসে ইমরান বলে তার পেট ব্যথা করছে। কিছুক্ষণ পরেই বমি করে। তারপর প্রথমে আখাউড়ায় সরকারি হাসপাতাল ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তাররা দেখে ঢাকায় নেওয়ার পর পরামর্শ দেয়। ঢাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর পেরে টিউমার ধরে পরে। চিকিৎসকদের পরামর্শে আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ক্যান্সার ধরা। খাদ্যনালীতে ক্যান্সার। এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসা সম্পূর্ণ করতে আরও প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, যা ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা করেছি। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমার ছেলেকে বাঁচাতে সবার কাছে সাহায্য চাই। আমার একটা ছেলে একটা মেয়ে। যারা বিত্তবান আছেন আমাকে একটু সাহায্য করবেন। সকলের সহযোগিতায় আমার ছেলেটাকে আল্লাহ তায়ালা সুস্থ দিতে পারেন।
ইয়াকুব মিয়ার প্রতিবেশি আলফাজ উদ্দিন বলেন, ইমরানকে দেখতাম স্কুলে যেতো। পাড়ার ছেলেদের সাথে খেলাধুলা করতো। হঠাৎ তার ক্যান্সার হয়েছে শুনে খুব খারাপ লাগছে। তার বাবা যতুটকু পেরেছে চিকিৎসা করেছে। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ সবাই একটু সহযোগিতা করুন।
দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুছা মিয়া বলেন, ইয়াকুব মিয়া আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে একটা সেলুনে কাজ করে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল। সবার একটু সহযোগিতায় হয়তো তার ছেলেটি সুস্থ্য জীবন ফিরে পেতে পারে। সবার কাছে অনুরোধ ইমরানের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করার জন্য।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান বলেন, খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হলে খাবার গ্রহণে অসুবিধা হয়। বমি হয়। ধীরে ধীরে ওজন কমে যায়। এটা ব্যয়বহুল চিকিৎসা। যথাযথ চিকিৎসা পেলে আরোগ্যের সম্ভাবনা থাকে।
কুশল/সাএ
 সর্বশেষ খবর
  জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর