অবিভক্ত ভারতবর্ষের প্রখ্যাত মুসলিম কবি মুহাম্মদ ইকবাল ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ঘিরে শুরু হচ্ছে ‘দ্য রোল অব ইকবাল অ্যান্ড নজরুল ইসলাম ইন ন্যাশনাল অ্যাওয়েকেনিং’ শীর্ষক ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স শুরু হয়েছে। সম্মেলনে ১৮টি দেশ থেকে প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। এতে ১৮টি সেশনে ১৩৩টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শুরু হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জগৎ মূলত মেধা, উদ্ভাবন ও যৌথ জ্ঞানচর্চার নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়। এই ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন সেই জ্ঞানচর্চা ও সহযোগিতার পরিসরকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।
তিনি আরও বলেন, এটি কেবল একাডেমিক আলোচনা নয় বরং নেটওয়ার্কিং ও মানবিক মূল্যবোধেরও এক অনন্য উদযাপন। এমন আয়োজন আমাদের পারস্পরিক বন্ধন ও সহযোগিতার ক্ষেত্রকে সুদৃঢ় করে।
উপাচার্য বলেন, আমরা আজ দুই মহান চিন্তাবিদ- আল্লামা ইকবাল ও কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবন ও দর্শনকে স্মরণ করছি। তাদের চিন্তা ও কর্ম আমাদের সমাজ, সাহিত্য ও মানবিক চেতনায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই সম্মেলনের আলোচনায় তাদের দর্শন থেকে নতুন অন্তর্দৃষ্টি ও বাস্তব দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে জুলাই অভ্যুত্থান এক স্থায়ী ছাপ রেখে গেছে। ‘জাগরণের দর্শন’ নিয়ে এই সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু তাই সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ। ইকবাল ও নজরুলের চিন্তাধারার সঙ্গে এই প্রেক্ষাপটের সংযোগ আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনাকে আরও গভীর করে তুলবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সম্মেলন থেকে আমরা এমন কিছু বাস্তব শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা পাবো, যা আমাদের জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে সহায়ক হবে। মানবতার কল্যাণে জ্ঞান ও সহযোগিতার এই যাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান এবং ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খাজা মো. একরামুদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলনের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. ইসরাফিল এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। পবিত্র আল-কোরআন থেকে তেলাওয়াতের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের চেয়ারম্যান মো. গোলাম মাওলার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থটের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল আজিজ এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর