বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের বিএনপি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, আমাকে জামায়াতে ইসলামী টাইটেল দিয়েছে ‘ফজু পাগলা’।
বাংলাদেশে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ অনেক মসজিদ আছে। কিন্তু কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদকে মানুষ সবচেয়ে বেশি সম্মান করে। কোটি কোটি টাকা, স্বর্ণ, ডলার, পাউন্ড এই পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পড়ে। সম্মান কতো! কাজেই কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদেরই কিশোরগঞ্জের সন্তান ‘ফজু পাগলা’। কাজেই যারা আমাকে এই উপাধি দিয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ দিলাম।
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের ইটনায় বিএনপি’র কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি গত ৮ই সেপ্টেম্বর ইটনায় এসেছিলাম। আপনারা বাংলাদেশের রেকর্ড ব্রেক করে আমার দুর্দিনে দুঃসময়ে ইটনার সমস্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা এবং জনতা আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এইটা বাংলাদেশে কোনো উদাহরণ নেই। বাংলাদেশ এখন এমন একটায় গিয়েছে, জয়ের অনেক বাবা আছে কিন্তু পরাজয় এতিম। যখন আমাকে দল সাসপেন্ড করলো, বাহিরের লোকজন সবাই মনে করেছিলো- ফজলুর রহমানের বিপদ হয়ে গেলো। তখন আমার জন্মভূমি জন্মস্থান ইটনার সমস্ত নেতাকর্মীদল, সমস্ত ছাত্রজনতা আপনারা এমনভাবে আমার পাশে দাঁড়ালেন, সারা দুনিয়া অবাক হয়ে গেলো যে এই লোকটা কি? এই লোকটারে যে কয় ‘ফজু পাগলা’, ইটনা থানার সব মানুষ কি পাগল নাকি! ‘ফজু পাগলা’ উপাধি আমি গ্রহণ করলাম মন্তব্য করে ফজলুর রহমান বলেন, অনেকেই মনে করেছিলো, আমি না কি মনোনয়ন পাবো না। আমি সেপ্টেম্বর মাসে ইটনায় আমার বক্তব্যে প্রথম জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমি নির্বাচন করবো কি না বলুন তো? আপনারা হাজার হাজার মানুষ হাত তুলে সমর্থন দিয়ে বলেছিলেন- ইয়েস। নির্বাচন করবেন। আমি দেখলাম একটা কথা ফাঁক দিয়ে বলেছি বুঝবার জন্য। তাহলে আমি ধানের শীষ চাই? আপনারা হাজার হাজার মানুষ আবারও হাত তুলেছিলেন। আপনারা বলেছিলেন, ফজলুর রহমানও চাই, ধানের শীষও চাই।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে ফজলুর রহমান বলেন, আমি জানতাম এবং প্রত্যেকদিন বলতাম- আমার দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে। আপনারা সবাই একটু শঙ্কার মধ্যে ছিলেন। কারণ আমার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বড় অপপ্রচার ছিলো। জামায়াত শত শত কোটি টাকা খরচ করেছে দেশে-বিদেশে। আমাকে দল থেকে একদম বহিষ্কার করে দেওয়ার জন্য জামায়াত চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমার দল বিএনপি, আমার দলের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমান আমাকে মনোনয়ন দিয়ে ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইনের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়েছে বলে তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তিনি উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞেস করেন, আপনারা কি আমার মনোনয়নে খুশি হয়েছেন? এ সময় আলহামদুলিল্লাহ বলে উপস্থিত জনতা হাততালি দেন। ফজলুর রহমান বলেন, আপনারা যখন মনে করেছিলেন আমাকে মনোনয়ন দিবে না, তখন ইটনা থানার ঘরে ঘরে কান্নার রোল পড়েছিলো। আমি যদি আল্লাহর রহমতে, মানুষের দয়ায় ও নেতাকর্মীদের কাজে এই এলাকার এমপি হতে পারি, তাহলে আমি এলাকার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিবো, ইনশাআল্লাহ।
ইটনা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এস এম কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে ফজলুর রহমানের সহধর্মিণী এডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মনির উদ্দিন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমেশ ঘোষ প্রমুখসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর