জুলাই অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক মানবতাবিরোধী অপরাধের যে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসির রায় হয়েছে, সেখানে আরেক আসামি ছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও।
তিনি এই মামলায় আসামি থেকে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হয়েছেন। মামলার পক্ষে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে আদালতকে ন্যায়বিচারে সহযোগিতা করেছেন সাবেক এ আইজিপি। এরপর থেকে তাকে আর আসামি হিসেবে বিবেচনা করেনি প্রসিকিউশন। তবে, রাজসাক্ষী হলেও মামুন মূলত মামলায় একজন আসামি, তাই তাকে শুনানিতে আদালতে হাজির করা হয়।
বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায়ের দিনও তাকে আদালতে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) হাজির করা হয়। রায়ের আগে তাকে ভবনের নিচের হাজতখানা থেকে ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে আসামির কাঠগড়ায় আনা হয়। কাঠগড়ায় পাশাপাশি রাখা কালো হাতলওয়ালা দুটো চেয়ারের পূর্বমুখী বিচারকদের দিকে ফিরে উত্তরের চেয়ারে বসেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
দক্ষিণ দিকের চোয়ার ফাঁকা ছিল, সাদার ওপরে আকাশি রঙের চেকের হাফ হাতা শার্ট পরিহিত মামুন সেখানে চেয়ারে বসে মাঝে মধ্যে দুই হাত বুকে বেঁধে আবার খোলাখুলি বসে থাকেন। পরনে ছিলো বিস্কুট কালারের ক্যাজুয়াল প্যান্ট। একটি কালো রংয়ের চশমা ছিল চোখে, অন্যটি ছিল শার্টের পকেটে। শার্টের পকেটে একটি মাস্কও দেখা গেছে। পায়ে ছিলো সাদা-কালো কেডস।
রায় ঘোষণার আগে থেকে বসে থাকা বিচারক আসন গ্রহণ করার সময় উঠে দাঁড়ান মামুন। এর পর দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে আদালত রায় পাঠ করেন। রায় ঘোষণার সময়টায় মামুনকে ভাবলেশহীনভাবে বসে থাকতে দেখা যায়। কখনো মাথা নত করে বসে ছিলেন, কখনো চোখ বন্ধ করে কিছু ভাবতে থাকেন তিনি।
তার হাতে দেখা গিয়েছে ডিজিটাল তসবিহও। রায় ঘোষণার মাঝে কখনো কখনো তিনি তসবিহ জপছিলেন, জিকির করছিলেন। কাঠগড়ার সামনে দুই পাশে দুটি মনিটর সচল ছিল। তাতে বিচারকক্ষের নির্দিষ্ট অংশ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল। মামুন একবারও সেদিকে তাকাননি। একপর্যায়ে রায় ঘোষণা শেষ হয়।
রায়ে হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও মামুনকে পাঁচ বছরের লঘুদণ্ড দেন আদালত। এরপর তাকে ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষ থেকে আবারও হাজতখানায় নামানো হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
আইন ও আদালত এর সর্বশেষ খবর