শীতের শুরুতেই বরগুনায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেকে আবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে দেখা দিয়েছে ওষুধসহ চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট।
বরগুনার আড়াইশো শয্যার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৫০টি শয্যা থাকলেও প্রতিদিন দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। বেড না পেয়ে অনেককে হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে থাকতে হচ্ছে। বরগুনা সদর উপজেলার পুরাকাটা গ্রামের সুরমা বেগম তার দুই মাসের শিশুর শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। ঠাণ্ডা লেগে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ডাক্তার তাকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে রেফার করেছেন। বরগুনা সদর উপজেলার পরীর খাল গ্রামের অলিউল্লার দুই শিশুসন্তান অসুস্থ থাকায় বরগুনার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বেড না পেয়ে গত চার দিন ধরে তারা হাসপাতালের মেঝেতে করিডোরে রয়েছে। বেশিরভাগ ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাহির থেকে।
অভিভাবকরা জানান, প্রথমে জ্বর-কাশি, এরপর নিউমোনিয়া ধরা পড়ছে। তাদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও ওষুধ কিনতে হচ্ছে ফার্মেসি থেকে। এছাড়া অনেক টেস্ট করতে যেতে হচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিকে। এতে তাদের খরচ বাড়ছে। ঠিকমতো আলো জ্বলে না, ওয়াশরুমের অবস্থাও বেহাল। নবজাতক জন্মের পর অনেকে নিউমোনিয়া বা জন্ডিস নিয়ে জন্ম নিলে তাদের রাখা হয় স্ক্যানুতে। সেই স্ক্যানুর অনেকগুলো মেশিন এখন বিকল অবস্থায় রয়েছে। এত রোগীর জন্য মাত্র একটি নেবুলাইজার মেশিন থাকায় বাধ্য হয়ে কেউ কেউ নিজেরাই নেবুলাইজার মেশিন কিনে নিচ্ছেন।
শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে শিশুদের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে হবে, তাদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাজকিয়া সিদ্দিকাহ জানান, হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নিউমোনিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে মায়েদের একটু সতর্ক থাকতে হবে এবং সকালে ও রাতে গরম পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, অতিরিক্ত রোগীর কারণে মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৮ শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছে ৪ শতাধিক শিশু।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর