• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৭ দুপুর

সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম, নেপথ্যে কারা?

ফাইল ফটো

তেলের বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরকারের অনুমতি ছাড়াই উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিলারদের কাছে বেশি দামে সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে। বাজারে পণ্য সংকট তৈরি করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর অভিযোগও উঠেছে। বাণিজ্য উপদেষ্টার সতর্কবার্তাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি; বরং প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নির্ধারিত বাড়তি দামে তেল বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জিনজিরা, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার এবং কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সন্ধ্যায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে ৯ টাকার পরিবর্তে ৫ টাকা বাড়ানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সারাদিন বাজারে তেল বিক্রি হয়েছে বাড়তি দামেই।

এর আগে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ১০ নভেম্বর লিটারে ৯ টাকা বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। পরে ২৪ নভেম্বর আবারও দাম সমন্বয়ের সুপারিশ পাঠায়। দু’বার চিঠি দেওয়া হলেও মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর পরও অ্যাসোসিয়েশন সরকারের অনুমতি ছাড়াই লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকায় তেল বাজারে ছাড়ে এবং সেই দাম মোড়কেও ছাপিয়ে দেয়। ফলে ভোক্তাদের বাড়তি মূল্যেই সয়াবিন তেল কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্যবায়ীদের নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক হয়। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে লিটারে ৯ টাকার পরিবর্তে ৫ টাকা বাড়ানোর অনুমতিপত্র দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রোববার মন্ত্রণালয়ে ফের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে নতুন মূল্য ঘোষণা ও চূড়ান্ত করা হবে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর জিনজিরা কাঁচাবাজার ঘুরে খুচরা পর্যায়ে তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক দেখা যায়নি। বাজারের ১১টি দোকানের মধ্যে ৬টিতে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। লিটারে বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা কিছুদিন আগেও ১৮৯ টাকা ছিল। 

বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. সাকিব বলেন, সকাল থেকেই কোম্পানির ডিলাররা বাড়তি দামের তেল সরবরাহ করছেন। তবে চাহিদা ২০ কার্টন দিলেও ৮ কার্টন দিয়ে গেছে। মনে হচ্ছে, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সয়াবিনের বাড়তি দাম বৈধ করা হচ্ছে। 

দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর নয়াবাজারে গিয়ে দেখা যায়, খুচরা বিক্রেতারা দোকান থেকে তেল লুকিয়ে ফেলছেন। কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, শুনেছি বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তাই নতুন দামের সব তেল সরিয়ে ফেলছি। কারণ, অফিসাররা দোকানে নতুন দামের তেল পেলে জরিমানা করবেন। 

বাজারের মুদি বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, আমাদের কী দোষ। কোম্পানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। ডিলাররা বাড়তি দামের তেল সরবরাহ করছে। আমরাও বাড়তি দাম দিয়ে কিনেছি। বিক্রি করতে হবে বাড়তি দামেই। কিন্তু অফিসাররা কোম্পানিকে জরিমানা না করে আমাদের জরিমানা করে। ক্রেতারা তেল কিনতে পারুক আর না পারুক, আগের কেনা যে তেল আছে, তা বিক্রি করে নতুন বাড়তি দামের তেল আর নেব না। বিক্রিও করব না।

দুপুর ১টা ৩৬ মিনিটে রাজধানীর কাওরান বাজারে গিয়ে ডিলারদের কাছে বাড়তি দামের তেল দেখলেও খুচরা দোকানে নতুন বাড়তি দামের সয়াবিন তেল বেশি একটা পাওয়া যায়নি। কিছু দোকানে আগের কেনা তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি নতুন বাড়তি দামে যে দোকানে তেল আছে, তারা বাড়তি দামে বিক্রি করতে ভয় পাচ্ছেন। 

কাওরান বাজারের মুদি বিক্রেতা মো. মকবুল আলম বলেন, ডিলাররা সকালে বাড়তি দামের তেল সরবরাহ করলেও এখন দিচ্ছেন না। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। পাশাপাশি বিক্রেতারাও বাড়তি দরের তেল নিতে ভয় পাচ্ছেন। কোম্পানিগুলো তেলের দাম বাড়ালে আমাদের বাড়তি দরে নিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু জরিমানা করা হয় আমাদের। সরকার কোম্পানিগুলোকে কিছু করে না। করতে পারেও না। 

তিনি জানান, এখন কোম্পানি যেহেতু দাম বাড়িয়েছি, সেহেতু তারা বাড়তি দামেই বিক্রির জন্য বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। 

বুধবার কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা দেখার অপেক্ষায় আছি। ২ ডিসেম্বর হঠাৎ ভোজ্যতেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ না করে তেলের দাম বাড়ায়, আমি বলব, সেটা আইনের ব্যত্যয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া যদি তেলের দাম বাড়ানো হয়, তবে সেটি হবে ভোক্তার অধিকারের প্রশ্ন। রিফাইনারি বন্ধ করে দেওয়ার মতো বিধান আইনে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা আইন আছে, ভোক্তা অধিকার আইন, যদি কেউ মজুত করে দাম বাড়ায়, সেখানে বিশেষ বিধান আইন প্রয়োগের ব্যবস্থাও আছে। সেই আইনের প্রয়োগটা দেখতে চাই।

বৃহস্পতিবার খামারবাড়ীতে বস্ত্র অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবসের’ কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের কারও সঙ্গে কথা বলেননি। তাই তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দুপুরে মতবিনিমিয় সভায় ভোজ্যতেলে দাম বৃদ্ধি ও কারসাজি নিয়ে ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফারুক আহমেদ। মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ‘ভোজ্যতেল আগের দামেই বিক্রি করতে হবে। বর্ধিত বা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু ভোজ্যতেল নয়, আগামী রমজানে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে হবে। এ সময় তিনি আরও বেশকিছু নির্দেশনাও দেন ব্যবসায়ীদের। 

তবে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, অ্যাসোসিয়েশন একটি মূল্য নির্ধারণ করে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে। সরকার মূল্য বিশ্লেষণ করে একটি নতুন মূল্য ঘোষণা করবে। যদি সরকার না করে, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন দাম কার্যকর হবে।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]