• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৯ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০২:২৫ দুপুর

প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কি সম্পূর্ণ হারাম?

ছবি: সংগৃহীত

জীবনের প্রয়োজন মেটাতে মানুষ নানা ধরনের সঞ্চয় পরিকল্পনায় যুক্ত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ব্যবস্থা হলো প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF)। অনেক মানুষের প্রশ্ন— এই সঞ্চয়ে কোনো সুদ বা হারাম উপাদান যুক্ত হচ্ছে কিনা? ইসলামি শরিয়ত দুনিয়ার প্রতিটি উপার্জনকে শুধু হিসাবের নয়— বরকতের মাপকাঠিতেও বিচার করে। তাই হালাল-হারাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরি।

এ প্রশ্নের উত্তর— ‘না।’ মূল টাকা পূর্ণভাবে হালাল। আর শুধু অতিরিক্ত সুদের অংশ হারাম।

প্রভিডেন্ট ফান্ডের ইসলামি বিধান
ইসলামে যেকোনো উপার্জন যেন সুদ, জুলুম বা নিষিদ্ধ লেনদেন থেকে মুক্ত থাকে— এ ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে অত্যন্ত কঠোর দিকনির্দেশনা রয়েছে। কুরআনের বিধান হলো—

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের বাকি অংশ ত্যাগ করো—যদি তোমরা সত্যিই ঈমানদার হও।’ (সুরা আল-বাকারাহ: আয়াত ২৭৮)

হাদিসেও এ ব্যাপারে কঠোর সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

لَعَنَ اللَّهُ آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ

‘সুদ গ্রহণকারী, প্রদানকারী, লেখক এবং সাক্ষী—সবার ওপর আল্লাহর অভিশাপ।’ (মুসলিম ৩৯৪৮)

উল্লেখিত কুরআনের আয়াত ও হাদিস থেকে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে— সুদযুক্ত যেকোনো আয়ের সঙ্গে জড়িত না থেকে তা পরিহার করা জরুরি।

প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রকারভেদ ও শরিয়াহ বিধান

ইসলামি স্কলাররা প্রভিডেন্ট ফান্ডকে (PF) সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন—

১. বাধ্যতামূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড (Mandatory PF)

যেখানে কর্মচারী ও নিয়োগকর্তা উভয়কে সরকার বা প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ডে (PF) অংশ নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে স্কলারদের মতামত হলো— এটি যেহেতু চাকরির শর্ত, কর্মচারীর জন্য এটি নেওয়া অনিবার্য। মূল জমাকৃত টাকা হালাল, কারণ তা কর্মচারীর বেতন থেকেই কাটা হয়। তবে সরকার বা প্রতিষ্ঠান প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF)-এর টাকা বিনিয়োগ করে যে অতিরিক্ত অর্থ (মুনাফা) দেয়— তা যদি সুদ হয়, তবে সেটি হালাল নয়। 

বিধান হলো— মূল টাকা হালাল। অতিরিক্ত সুদ—গরিবদের দিয়ে দিতে হবে, নিজের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এটি দান নয়; বরং হারাম থেকে মুক্তির জন্য বের করে দেওয়া।

২. স্বেচ্ছাসেবী প্রভিডেন্ট ফান্ড (Voluntary PF)

যেখানে কর্মচারী নিজের ইচ্ছায় প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF) বাড়িয়ে জমা দেন। এ ক্ষেত্রে বিধান হলো— যদি প্রতিষ্ঠান প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF)-এর অর্থ এমনভাবে বিনিয়োগ করে যেখানে সুদ অপরিহার্য— তাহলে স্বেচ্ছায় যুক্ত হওয়া মাকরূহ বা নাজায়েজ হতে পারে। তবে বিনিয়োগ যদি শরিয়াহসম্মত হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।

ইসলামিক স্কলার ও ফিকহ অ্যাকাডেমির রায়

> ইসলামিক ফিকহ অ্যাকাডেমি (ওআইসি), তারা স্পষ্ট বলেছেন— প্রভিডেন্ট ফান্ড (Forced/mandatory PF)-এর অতিরিক্ত অংশ সুদ হলে তা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য হালাল নয়।

> দারুল উলুম দেওবন্দ / দারুল ইফতা হিন্দ: তাদের ফতোয়া— ‘মূল টাকা হালাল, কিন্তু অতিরিক্ত সুদের টাকা গরিব-মিসকিনদের দিয়ে দিতে হবে— নিজে  জন্য ব্যবহার করা যাবে না।’

> শায়খ সালিহ আল-উছাইমিন (রহ.) বলেন— ‘যে সুদ কর্মচারীর অজান্তে বা বাধ্য হয়ে এসেছে, সে তা নেবে কিন্তু নিজের কাজে ব্যবহার করবে না— এটি দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করে দেবে।’

তাহলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কি সম্পূর্ণ হারাম?

এ প্রশ্নের উত্তর— ‘না।’ মূল টাকা পূর্ণভাবে হালাল। আর শুধু অতিরিক্ত সুদের অংশ হারাম।

তবে অনেক ইসলামিক স্কলারের মতে, যে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যাপারে আপনার ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোনো অবকাশ নেই। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে টাকা জমা হতে থাকবে। যেমনটি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। প্রভিডেন্ট ফান্ডের এ টাকা উত্তোলন না করে জমা পড়ে থাকল এবং এতে ওদের হিসেব অনুযায়ী সুদ যোগ হতে থাকল। আপনার জন্য এই সুদসহ পুরো টাকা নেওয়া জায়েয। যেহেতু মূল টাকার সঙ্গে যোগ হওয়া বর্ধিত টাকাগুলো নামে সুদ হলেও শরিয়তের আলোকে এটা সুদ নয়। বিধায় আপনি এ ফান্ডের মূল ও বর্ধিত অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।

প্রভিডেন্ট ফান্ড আধুনিক চাকরির একটি প্রচলিত সঞ্চয়ব্যবস্থা। শরিয়ত মানুষের কষ্ট বা বাস্তবতা অস্বীকার করে না— তাই বাধ্যতামূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF) গ্রহণে কোনো গুনাহ নেই। তবে একজন ঈমানদারের দায়িত্ব হলো নিজের সম্পদকে যতটা সম্ভব সুদ ও হারাম থেকে পরিশুদ্ধ রাখা। তাই প্রভিডেন্ট ফান্ড (PF)-এর মূল টাকা নিজের জন্য এবং সুদের অংশ গরিবদের দেওয়ার মাধ্যমে একজন মুমিন তার উপার্জনকে হালাল রাখতে পারে।

মনে রাখতে হবে, হালাল উপার্জন জীবনে বরকত আনে, হৃদয়ে প্রশান্তি আনে, দোয়া কবুলের দরজা খুলে দেয়। অতএব চলুন— আমরা আমাদের রিজিককে পরিশুদ্ধ রাখার চেষ্টা করি; কারণ আল্লাহ হারামকে সামান্যতমও পছন্দ করেন না।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]