ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে ছয় ধরনের দলিল সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হবে। মূলত সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও জালিয়াতিমুক্ত করতে এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, যেসব দলিলে প্রতারণা, জালিয়াতি বা আইনগত ত্রুটি পাওয়া যাবে, সেগুলো আর বৈধ হিসেবে গণ্য হবে না।
এরপর ২০২৬ সালের জুলাই থেকে সারাদেশে ‘ডিজিটাল ভূমিজরি বিডিএস (BDLand System)’ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে। এই প্ল্যাটফর্মে শুধুমাত্র যাচাইকৃত ও বৈধ দলিলগুলো অনলাইনে সংরক্ষিত থাকবে।
বাতিল হতে যাচ্ছে যেসব ৬ ধরনের দলিল
১️. হেবা দলিল: প্রতারণা, জালিয়াতি বা অসুস্থ/অক্ষম ব্যক্তিকে ব্যবহার করে নেওয়া টিপসসহীহযুক্ত হেবা দলিলগুলো বাতিল করা হবে।
২️. ওসিয়তনামা দলিল: আইন অনুযায়ী মোট সম্পত্তির সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ ওয়ারিশের বাহিরে কাউকে ওসিয়ত করা যায়। এই সীমা লঙ্ঘন করে করা দলিলগুলো অবৈধ বলে গণ্য হবে।
৩️. রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল: যেসব দলিলে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই মালিকানা দাবি করা হয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হবে।
৪️. জাল দলিল: প্রতারণা বা নকল কাগজপত্রের মাধ্যমে তৈরি দলিল শনাক্ত করে বাতিল করা হবে, এবং এর মাধ্যমে অর্জিত মালিকানাও বাতিল করা হবে।
৫️. ক্ষমতার অপব্যবহারে অর্জিত দলিল: রাজনৈতিক প্রভাব বা পেশিশক্তি ব্যবহার করে জমি দখল বা মালিকানা অর্জনকারীদের দলিলও যাচাইয়ের পর বাতিল ঘোষণা করা হবে।
৬️. অংশের চেয়ে বেশি বিক্রিত দলিল: যৌথ বা পারিবারিক সম্পত্তিতে নিজ অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রির ঘটনা প্রমাণিত হলে সেই দলিলও বাতিল হবে, এবং আদালতের মাধ্যমে প্রকৃত ওয়ারিশদের অংশ ফেরত দেওয়া হবে।
ভূমি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে দেশে বহুল প্রচলিত ভূমি জালিয়াতি, দ্বৈত দলিল ও ওয়ারিশ সংক্রান্ত বিরোধ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পুরো প্রক্রিয়া ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা হবে, যাতে জুলাই থেকে পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক ভূমি রেকর্ড ও দলিল ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু করা যায়।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর