• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৫৭ দুপুর
এনআইডি’র তথ্য সংশোধন

আবেদন ফি পাঁচ হাজার টাকা আরোপের প্রস্তাব

প্রতীকী ছবি

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। বর্তমানে এই ধরনের আবেদন ফি ৪০০ টাকা, কিন্তু প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করা হয়েছে। আপিল বা রিভিশন আবেদনের ক্ষেত্রেও নাগরিকদের একই পরিমাণ ফি দিতে হবে।

এছাড়া এতে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাটও যুক্ত হবে। নাগরিক যতোবার এনআইডি তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করবেন, ততোবারই এই বাড়তি ফি জমা দিতে হবে। এসব ফি অন্তর্ভুক্ত করে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত (সংশোধন, যাচাই এবং সরবরাহ) প্রবিধানমালা’ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এতে জন্মতারিখ সংশোধনের কার্যক্রম মাঠপর্যায় থেকে সরিয়ে ঢাকায় নেওয়া হবে। রোববার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন কমিশনের ১০তম সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য এজেন্ডায় রাখা হয়েছে। অনুমোদন হলে এনআইডি তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে জনগণের ওপর বাড়তি ফি চাপ পড়বে। এই তথ্য সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, সাধারণত প্রতি মাসে কমবেশি ৮০ হাজার মানুষ এনআইডি’র তথ্য সংশোধনের আবেদন করেন। সঠিক সময়ে আবেদন নিষ্পত্তি না করে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তথ্য সংশোধন করে দেওয়ার নামে নাগরিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

এমন পরিস্থিতিতে নতুন ফি আরোপ মানুষকে আরও ভোগান্তিতে ফেলবে বলে মনে করছেন খোদ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা। অবশ্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তথ্য সংশোধনের আবেদন সংখ্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বাড়তি ফি আরোপ করা হচ্ছে। নতুন ফি আরোপের ফলে কথায় কথায় আবেদনের প্রবণতা কমে আসবে। এতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কাজ কমে যাবে।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর জানান, একবারেই ফি বেশি ধরা হচ্ছে না। একজন ব্যক্তি যতবার আবেদন করবেন, ততবারই ফি দিতে হবে।

তিনি বলেন, অনেকেই একাধিক—কেউ কেউ ১০ বার পর্যন্ত—তথ্য সংশোধনের আবেদন করেন। এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে অনেক সময় লাগে। দেশে মানুষের সংখ্যা বেশি, কিন্তু এনআইডি সংশোধনের জন্য জনবল সীমিত। এজন্য সব আবেদন সময়মতো নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয় না। তিনি আরও জানান, যখন ফি বাড়ানো হবে, তখন সবাই আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক হবে। নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে তিনি বলেন, বিদেশে অনেক জায়গায় দেখেছি শাস্তির তুলনায় জরিমানা বেশি রাখা হয়, যা বিড়ম্বনা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, এবার থেকে আবেদন জমা দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনুপস্থিত থাকলে তা সার্ভারে গ্রহণযোগ্য হবে না।

প্রস্তাবিত নতুন ফি

প্রবিধানমালায় বড় ধরনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে তথ্য-উপাত্ত সংশোধনের ধরন অনুযায়ী আবেদন ৯টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। আবেদন নিষ্পত্তির সময়সীমাও নির্ধারণ করা হচ্ছে, যা সর্বনিম্ন সাত দিন থেকে সর্বোচ্চ দেড় মাস পর্যন্ত। বর্তমানে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা প্রায়ই সম্ভব হয় না। নতুন প্রস্তাবে প্রথমবারের আবেদন ফি ধরা হয়েছে ৩০০ টাকা। ভ্যাটসহ তা দাঁড়াবে ৩৪৫ টাকা, যা বর্তমানে ভ্যাটসহ ২৩০ টাকা। অর্থাৎ প্রথম আবেদনের ক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করলে ফি প্রস্তাব করা হয়েছে ৫০০ টাকা, ভ্যাটসহ ৫৭৫ টাকা। বর্তমানে একই ফি ৩০০ টাকা, ভ্যাটসহ ৩৪৫ টাকা। এতে দ্বিতীয় আবেদনের খরচ বেড়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ।

বিদ্যমান নীতিমালায় দ্বিতীয়বারের পর যতবার আবেদন করবে প্রত্যেকবার ৪০০ টাকা ফি রয়েছে। বারবার আবেদন করলেও ওই ফির পরিমাণ বাড়ে না। প্রস্তাবিত নীতিমালা তৃতীয়বার থেকে যতবার আবেদন করবে ততই ফি বাড়বে। একই ব্যক্তি তৃতীয়বার সংশোধন আবেদন করলে ফি দিতে হবে ৮০০ টাকা। ভ্যাটসহ তা দাঁড়াবে ৯২০ টাকা। চতুর্থবার আবেদন ফি ভ্যাটসহ দুই হাজার ৩০০ টাকা, পঞ্চমবার আবেদন ফি তিন হাজার ৪৫০ টাকা এবং পরবর্তী যতবার আবেদন করবে তার ফি হবে পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা।

এবার আবেদনের দুটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। একটি হচ্ছে, আপিল ও আরেকটি হচ্ছে রিভিশন। কোনো ব্যক্তি বারবার তথ্য সংশোধনের আবেদন করার পরও তা না হলে তিনি নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর আপিল করতে পারবেন। এই আপিল করার জন্য পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা ফি জমা দিতে হবে। সচিব যদি ওই আপিল নামঞ্জুর করেন তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাছে রিভিশন চেয়ে আবেদন করা যাবে। সেখানেও পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা ফি জমা দিতে হবে। বর্তমানে আপিল করার জন্য টাকা জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। যদিও আপিল অনলাইনভুক্ত করা হয়, তখন একটা ফি দিতে হয়। নতুন নিয়মে আবেদন করলেই পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা ফি জমা দিতে হবে। ওই আবেদন গ্রহণ হতে পারে আবার বাতিলও হতে পারে।

বেঁধে দেওয়া হচ্ছে সময়

প্রস্তাবিত প্রবিধানমালায় আবেদনের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী তা নিষ্পত্তির সময়সীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে। সাধারণত, আবেদনকারীর নাম, বাবা-মায়ের নামের মুদ্রণজনিত ভুল, টিআইএন নম্বর বা মোবাইল নম্বর সংশোধনের আবেদনের ক্যাটাগরি হবে ‘ক-১’। এই ধরনের আবেদন দাখিলের সাত দিনের মধ্যে সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নিষ্পত্তি করবেন। নামের বানান সংশোধন (পুরো নাম পরিবর্তন ছাড়া), জন্মস্থান পরিবর্তন, শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তনসহ অন্যান্য তথ্য সংশোধনের আবেদন ‘ক’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ১০ দিনের মধ্যে তা সমাধান করবেন। ‘খ-১’ ক্যাটাগরির আবেদন ১৪ দিনে অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ‘খ’ ক্যাটাগরির আবেদন ২১ দিনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, এবং ‘গ-১’ ক্যাটাগরির আবেদন ২১ দিনে অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা নিষ্পত্তি করবেন। আগে অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে এ ক্ষমতা ছিল না; প্রস্তাবে তাদের সংশোধনের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ছবি, আঙুলের ছাপ ও স্বাক্ষর সংশোধনের ক্ষমতা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পরিবর্তে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দেওয়া হচ্ছে। ‘গ’ ক্যাটাগরির আবেদন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবেন। ‘ঘ’ ক্যাটাগরির আবেদন সরাসরি জাতীয় পরিচয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক নিজে নিষ্পত্তি করবেন। প্রতিটি আবেদনের সর্বোচ্চ নিষ্পত্তির সময়সীমা ৪৫ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত প্রবিধানমালায় জন্মতারিখ সংশোধনে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জন্মতারিখ সংশোধনের ক্ষমতা ও এখতিয়ার জাতীয় পরিচয় অনুবিভাগের মহাপরিচালকের হাতে রাখার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এর ফলে জন্মতারিখ সংশোধন সংক্রান্ত হাজার হাজার আবেদনকারীকে গ্রাম থেকে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে আসতে হবে। হয়তো প্রমাণ দিতে হবে আবেদনের সপক্ষের কাগজপত্র। এতে তাদের সময়, অর্থ ও পরিশ্রম-সবই বাড়বে।

জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর শুক্রবার বলেন, জন্মতারিখ সংশোধন করে অনেকে বয়স কমিয়ে বা বাড়িয়ে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। এতে ভোটার ডেটাবেসের গ্রহণযোগ্যতা কমছে।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তাই বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতে হয়তো কাজের চাপ বাড়বে। তবে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের সব কর্মকর্তা মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে আবেদনকারীদের হয়তো ঢাকায় আসতে হবে না।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]