ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার পর দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। সংগঠনটির দাবি, হামলার পর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিজ উদ্যোগে তথ্য সংগ্রহে তৎপর না হয়ে উল্টো ইনকিলাব মঞ্চের কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।
তিনি বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলার পর দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। তাদের কাজ ছিল হামলাকারীদের গতিবিধি অনুসরণ করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা। অথচ তারা নিজেরা কিছু না করে আমাদের কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চাইছে।”
এ সময় তিনি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেন। আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, “এই সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ এবং কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপ’ প্রতিহত করতে সোমবার সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
তিনি বলেন, “সোমবার ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে শহীদ মিনারে একটি সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে কোনো ভারতপন্থী গোষ্ঠীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ মিনার থেকে ভারতীয় আগ্রাসন ও আওয়ামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। দেশপ্রেমিক সব রাজনৈতিক দলকে ওই সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
হাদির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, “তার অবস্থার কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। ইনকিলাব মঞ্চ এবং তার পরিবার হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিকিৎসকদের সম্মতি পেলেই তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।” তিনি জানান, এ জন্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ইতোমধ্যে একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করা হয়েছে।
সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা বলেন, “যদি হাদির কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে সেটাই হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের বিদায় ঘণ্টা। ছাত্র-জনতাই এই সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, আর তারাই প্রয়োজনে এই সরকারকে নামিয়ে দেবে।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর এলাকার বক্স কালভার্ট রোডে রিকশাযোগে যাওয়ার সময় শরিফ ওসমান হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর