আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত বন্ধে করা একটি আইনি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার পথ আরও সুগম হলো।
সোমবার দেওয়া রায়ে আইসিসির আপিল চেম্বারের বিচারকরা নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সময় সংঘটিত অভিযোগগুলো তদন্ত করার ক্ষমতা আইসিসি প্রসিকিউটরের কাছেই থাকছে।
এর আগে ইসরায়েল দাবি করেছিল, ৭ অক্টোবরের পর গাজায় চালানো সামরিক অভিযান একটি “নতুন পরিস্থিতি”, যার জন্য নতুন করে আইসিসির নোটিশ দেওয়া প্রয়োজন ছিল। তারা যুক্তি দেয়, ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি ও মেক্সিকোসহ সাতটি দেশ নতুন করে মামলাটি আদালতে উত্থাপন করায় তদন্তের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ।
তবে বিচারকরা এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ২০২১ সালে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে তদন্ত শুরু করার সময় যে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, সেটিই পরবর্তী ঘটনাবলিকেও অন্তর্ভুক্ত করে। নতুন করে কোনো নোটিশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
এই রায়ের ফলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল থাকছে। এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে আইসিসি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পরোয়ানা জারি করেছিল।
আইসিসি একই সঙ্গে হামাস নেতা ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও, তার মৃত্যুর বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়ার পর তা প্রত্যাহার করা হয়।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল আইসিসির এখতিয়ার স্বীকার করে না এবং গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১১ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পরও অন্তত ৩৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৬৩ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৬৩২টি মরদেহ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৭০,৬৬৩ জনে, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজার ১৩৯ জন।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর