ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালের বাবা ও মা আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির এবং মা মোসাম্মৎ হাসি বেগমকে আদালতে হাজির করা হয়।
এরপর তাদের সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বিকাল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে তাদের এজলাসে ওঠানো হয়।
এরপর তাদের ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য বিচারকের খাসকামরায় নেওয়া হয়।
পরে জবানবন্দি শেষে রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলাম তাদের তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান এতথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আসামিরা এই মামলায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম তা রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ এলাকা থেকে তাদের আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শরীফ ওসমান হাদি অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্লাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটর সাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তার মাথা ও ডান কানের নিচের অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম প্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় অত্যন্ত সংকটাপন্ন পর্যায়ে রয়েছেন। এ ঘটনায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টা মামলাটি করেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন এবং তার অবস্থা সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, গত ১৪ ডিসেম্বর হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দুর্বৃত্তদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আব্দুল হান্নানকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়াও গত ১৫ ডিসেম্বর ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমার পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান অভিযুক্তের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবিরের ৭ দিন এবং পরদিন ১৭ ডিসেম্বর গুলি করার পর পলাতে সহায়তাকারী নুরুজ্জামান নোমানী'র তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর