বাংলাদেশে অন্যায় হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও সমাজে প্রকৃত শান্তি ফিরিয়ে আনতে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী কিসাস ও ইসলামী দণ্ডবিধি প্রয়োগের জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জুমার খুতবায় তিনি বলেন, "শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের যদি বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে শরীফ ওসমান হাদীর হত্যাকারীদেরও আনা সম্ভব। খালি গণতন্ত্রের নাম নিয়ে মানুষকে শান্ত করা যাবে না।"
খতিব তার বক্তব্যে বলেন, দেশে এমন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে যেখানে বড় অপরাধী ও খুনিরা জামিন পেয়ে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে, অথচ অনেক নিরপরাধ মানুষ বছরের পর বছর কারাগারে থেকে জামিনও পায় না।
তিনি বলেন, "বড় পাপাচারী জেলে ঢুকে জামিন পায়, বের হয়ে আবার বিদেশে চলে যায়, হত্যা করে পালিয়ে যায়—এই অবিচার মানুষ দেখছে।"
হাদী হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শরীফ উসমান হাদী ও চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের রক্ত আল্লাহর কাছে সমান মূল্যবান।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, "যার হত্যার পর পুরো দেশ জেগে ওঠে তার রক্ত যেমন আল্লাহর কাছে রক্ত, আবার যার হত্যার পর প্রতিবাদ নেই, সাংবাদিক নেই—তার রক্তও আল্লাহর কাছেই রক্ত।"
মুফতি আব্দুল মালেক কুরআনের বিধান উল্লেখ করে বলেন, অন্যায় হত্যার শাস্তি হিসেবে কিসাস আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন, যার অর্থ সমপরিমাণ প্রতিশোধ, যেখানে ন্যায় ও সমতা রয়েছে।
তার ভাষায়, "কুরআনে স্পষ্ট বিধান আছে। কিন্তু আমরা তেলাওয়াত করি না, প্রয়োগ তো দূরের কথা।"
তিনি বলেন, আগের সরকার ও বর্তমান সরকার—উভয় আমলেই বহু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কিন্তু এর কতগুলোর বিচার বাস্তবে সম্পন্ন হয়েছে, সেই প্রশ্ন আজ জনগণের সামনে। "খালি আশ্বাস দিলে মানুষ আশ্বস্ত হয় না, মানুষ ফলাফল চায়।"
গণতন্ত্রের সমালোচনা করে খতিব বলেন, "গণতন্ত্রের পরীক্ষা হয়ে গেছে। বিগত সরকারের নির্বাচনকেও গণতন্ত্র বলেছে। যতদিন আল্লাহর বিধানের কথা বলতে লজ্জা পাবেন, ততদিন দেশে শান্তি আসবে না।"
মামলা দীর্ঘসূত্রতার জন্য ব্রিটিশ আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "মামলা ঝুলিয়ে রাখা ইংরেজদের সভ্যতা। ইসলামী পদ্ধতিতে কোনো মামলা ঝুলে থাকবে না।"
খুতবার শেষাংশে তিনি বলেন, "সাহস করে যদি ইসলামের দণ্ডবিধি ও কিসাস প্রয়োগ করা যায়, তাহলে সমাজে পূর্ণ শৃঙ্খলা, শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসবে।"
তিনি হাদীর জন্য দেশব্যাপী দোয়া আয়োজন প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে বলেন, দোয়া হাদীর জন্য হলেও এর ফল সমাজ ও রাষ্ট্রকেই ভোগ করতে হবে—যদি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর