নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজায় লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দান। জানাজা শেষে বের হয় বিক্ষোভ মিছিল, যা ‘আমরা সবাই হাদি হব’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর লালদিঘী ময়দানে ‘চট্টগ্রামের সর্বস্থস্তরের ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি ও দোয়া পরিচালনা করেন কল্পোলোক আবাসিক জামে মসজিদের খতিব ইমরানুল হক সায়েম। জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেয়।
জানাজা শুরুর আগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক জুবায়েরুল ইসলাম মানিক, ইবনে ওমর যায়েদ ও জুলাই ঐক্য চট্টগ্রামের আহ্বায়ক ইবনে হাসান জিয়াদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ইবনে ওমর যায়েদ বলেন, আজকের এই জানাজা থেকে আমরা একটি বার্তা দিতে চাই। আমাদের হাদি ভাইয়ের লড়াই ছিল সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। আমাদের হাদি ভাইয়ের লড়াই ছিল ইনসাফের পক্ষে। আমাদের হাদি ভাইয়ের লড়াই ছিল ইনকিলাবের পক্ষে। আমরা বলতে চাই—ইনসাফের লড়াই, ইনকিলাবের লড়াই। আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারকে বিদায় করেছি। সুতরাং কোনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যদি বাংলাদেশকে নেক্সট টার্গেট করতে চায়, বাংলাদেশকে বাইরে ঠেলে দিতে—তাহলে বাংলার জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিরোধ করবে, ইনশাআল্লাহ। সুতরাং আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো ধরনের উস্কানিতে পা দেওয়া যাবে না।
জুলাই ঐক্যের আহ্বায়ক ইবনে হাসান জিয়াদ বলেন, আমাদের হাদি ভাইয়ের যে দাবি রয়েছে, শহীদ হাদি ভাইয়ের আদর্শকে ধারণ করে আমরা সরকারের কাছে সেই দাবিগুলো উত্থাপন করবো।
দুপুরে নগরের জামালখান প্রেসক্লাবের সামনে এন্ট্রি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াড এর উদ্যোগে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাযায় অংশ গ্রহণ করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জুলাই যোদ্ধা, ছাত্র-জনতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এসময় জানাযার ইমামতি করেন জুলাইয়ের শহীদ মাহবুবুল হকের ছোট ভাই মঞ্জু মাহিম। জানাজা শেষে হাদির হত্যাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে বিচারের আল্টিমেটাম দেন এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াড এর মুখপাত্র রিদুয়ান হৃদয়। এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াডের মুখপাত্র রিদুয়ান হৃদয় বলেন" আজ যেভাবে হাদির হত্যাতে পুরো দেশ উত্তাল সেভাবে যদি হাদির জীবদ্দশায় হাদির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হতো অন্তত হাদি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকতো, হাদীর হত্যাকারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় না আনা হয় আরও বড় ধরনের কর্মসূচি দেয়া হবে।"
এছাড়া সন্ধ্যায় নগরের বিপ্লব উদ্যান ২নং গেইটে জাতীয় নাগরিক পার্টি, যুবশক্তি, শ্রমিক শক্তি ও ছাত্রশক্তির উদ্যোগে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি জিইসি গিয়ে পুনরায় ২নং গেইটে এসে শেষ হয়।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর