• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৭ সেকেন্ড পূর্বে
মোহাম্মদ ফয়সাল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:০২ রাত

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুইস্যা অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

চট্টগ্রামের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, বুইস্যা বাহিনীর প্রধান শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যাকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, চাঁদাবাজি, নাশকতা ও মাদক সংক্রান্ত ৪২টি মামলা রয়েছে।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নগরের চান্দগাঁও থানার ফিনলে সাউথ সিটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল ও ৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

অভিযান সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে বুইস্যার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। অভিযানের সময় তার হেফাজত থেকে দেশি ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। এই অভিযানে বুইস্যার চলাচল ও কার্যক্রম সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে।

শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যা ভোলার দৌলতখান উপজেলা সদরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। পড়াশোনার তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সমাবেশে দলবল নিয়ে যোগদানের ছবি ও ভিডিও রয়েছে তার। নিজেকে ওই সময় পরিচয় দিতেন নগর ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) নেতা হিসেবে। তবে কোনো পদে ছিলেন না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, চুরি ও ছিনতাইয়ের মাধ্যমে অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয় বুইস্যার। গায়ের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা লাগিয়ে জটলা তৈরি করে মানুষের কাছ থেকে জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতেন তিনি। পরবর্তীতে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন এবং নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে গড়ে তোলেন একটি নিজস্ব বাহিনী।

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত। বুইস্যার বিরুদ্ধে ছিনতাই, অস্ত্র, চাঁদাবাজি ও মাদক সংশ্লিষ্ট অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। চাঁদাবাজি ও এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তার একটি নিজস্ব ‘টর্চার সেল’ থাকার তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাদক বিক্রি ও চাঁদাবাজির অর্থ দ্রুত গণনার জন্য সেখানে বিশেষ গণনার যন্ত্রও ব্যবহার করা হতো বলে জানা গেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যে জানা গেছে, চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হলেই বুইস্যা ও তার বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে গুলি ছোড়েন। গত ৪ অক্টোবর তার সহযোগী মুন্না পাঁচলাইশের বাদুড়তলা এলাকায় একটি গ্যারেজের সামনে গুলি চালান। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিজয় চৌধুরীর গ্যারেজের সামনে গিয়ে মুন্না হুমকি দিতে থাকেন এবং একপর্যায়ে কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলি ছোড়েন। এতে কেউ আহত না হলেও, গ্যারেজের মালিক ও আশপাশের লোকজন ‘ডাকাত, ডাকাত’ বলে চিৎকার করলে মুন্না গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর চান্দগাঁও থানার পাশের একটি মোটর গ্যারেজে চাঁদা না পেয়ে নিজেই গুলি চালান শহিদুল। গ্যারেজের মালিক মারুফ খান জানান, প্রথমে ফোনে ২০ লাখ টাকা এবং পরে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গুলি করা হয়। একই বছরের ১৯ অক্টোবর বুইস্যা ও তার সহযোগীরা মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ ও র‍্যাব জানিয়েছে, শহিদুল চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকায় ৩০ সদস্য নিয়ে একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন। এই বাহিনী এলাকায় মাদক, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।

বুইস্যার সহযোগীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন—১৮ মামলার আসামি আইয়ুব আলী, ৯ মামলার আসামি মো. ইদ্রিস, ৫ মামলার আসামি মো. ইয়াসিন, ৪ মামলার আসামি শিবু। এছাড়া রাকিব, সবুজ, রাসেল, ইমন, কামরুল, হাফিজুল ইসলাম, মো. মুন্না, হাবিব, মুরাদ, আজিম, শাহাব উদ্দিন, হিরু, শাকিব, বোরহান উদ্দিন, মোহাম্মদ মারুফ, আল আমিন, মিজানুর রহমান, রোকন উদ্দিন, আলী আহাম্মদ, শান্ত মজুমদার, মো. অন্তর, বিরো পাল, মোহাম্মদ রাহাত ও মোহাম্মদ ফরহাদও এই বাহিনীতে রয়েছেন।

পুলিশ সন্ত্রাসী বুইস্যার কাছে মোট কত অস্ত্র আছে তা নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি। তবে জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর বুইস্যাল তার তিন সহযোগীর কাছ থেকে ১৩টি দেশি ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩টি ম্যাগাজিন এবং ৫৮টি গুলি উদ্ধার করেন। এর আগে গত ২০ জুলাই, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শহিদুল ও তার বাহিনীর প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর হাতে অস্ত্র দেখা যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বহদ্দারহাট ফিনলে স্কয়ার শপিং মলের পাশের খালপাড় ও আশপাশের এলাকা দীর্ঘদিন ধরে বুইস্যার প্রভাববলয়ে ছিল। ওই এলাকায় মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্রের লেনদেন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম তার নির্দেশেই পরিচালিত হতো। তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে নিয়মিত ভয়ভীতি ও অস্ত্র প্রদর্শন করত। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটকে বুইস্যা বাহিনী ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করত। সেখানে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানো ব্যক্তি ও প্রতিপক্ষদের আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার ঘটনায়ও বুইস্যা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনার কারণে চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকার সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন।

চট্টগ্রাম র‍্যাবের সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফফর হোসেন বলেন, বুইস্যা ও টেম্পো গ্রুপের সদস্যরা চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছে। সম্প্রতি পাঁচলাইশ থানাধীন পশ্চিম ষোলশহর এলাকা থেকে টেম্পো গ্রুপের প্রধান ইসমাইল হোসেন টেম্পুও গ্রেপ্তার হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় বুইস্যার বিরুদ্ধে অস্ত্র, চাঁদাবাজি, নাশকতা ও মাদক সংক্রান্ত ৪২টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]