• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২০ সেকেন্ড পূর্বে
মোঃ আসাদুজ্জামান
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:২২ দুপুর

কীটনাশকসহ সার ওষুধের দাম বেশি, লোকসানের আশঙ্কায় বরগুনার আলু চাষিরা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বরগুনায় এবছর সার ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে আলুর চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। একদিকে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি অপরদিকে জেলায় আলুর জন্য কোনো হিমাগার না থাকায় কাঙ্ক্ষিত লাভ নিয়ে শঙ্কিত তারা। তবে কৃষকদের কাছে ন্যায্যমূল্য কীটনাশক, সার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ বিক্রি নিশ্চিত করাসহ হিমাগার নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরগুনা কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আলু চাষের দিক থেকে বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরগুনার অবস্থান তৃতীয়। তুলনামূলকভাবে দক্ষিণ অঞ্চলে আলুর চাষ কিছুটা কম হলেও বরগুনায় উৎপাদিত আলুতে অনেকটাই চাহিদা পূরণ হয়। তবে গত বছর বরগুনায় ৯৭৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবছর তা কমিয়ে ৯৪৫ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১২০, পাথরঘাটায় ৫৬২, বামনা ৪২, বেতাগী ১৩২, আমতলী ১৯ এবং তালতলীতে ৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে এ বছর জেলায় মোট আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন।

বরগুনায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ৫৭০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ সম্পন্ন করেছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা। এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১৫.৩৭, পাথরঘাটায় ৩৫০, বামনা ৪২, বেতাগী ১২০, আমতলী ১৭ এবং তালতলীতে ২৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষ সম্পন্ন করা হয়েছে। যা কৃষি বিভাগের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনো ৩৭৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ বকি রয়েছে। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিপত্তির বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগ সঠিক সময়ে আলু বীজ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সার আগের দামের তুলনায় বেশি দেমে কিনতে হচ্ছে বলেও জানান কৃষকরা। এতে আলু খেতের সকল খরচ মিলিয়ে উৎপাদনের পর লাভ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। অপরদিকে জেলায় উৎপাদিত আলুর জন্য কোনো হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণ নিয়েও শঙ্কিত বরগুনার স্থানীয় কৃষকরা।

সরেজমিনে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের বিভিন্ন খেত ঘুরে দেখা যায়, আলু চাষের জন্য খেত প্রস্তুত করে বীজ বপনে একত্রে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারী ও পুরুষ চাষিরা। এদের মধ্যে পুরুষ চাষিরা খেত প্রস্তুত করছেন এবং নরী চাষিরা বীজ বপন করছেন। লাভের আশায় এ সব চাষিরা আলু চাষে ঝুঁকলেও এ বছর সার ওষুধ ও সঠিক সময়ে বীজ না পাওয়ায় লোকসানের শঙ্কায় পড়েছেন তারা। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শসহ তেমন কোনো সহযোগিতাও দেওয়া হয়না বলে অভিযোগ এসব আলু চাষিদের।

কালমেঘা ইউনিয়নের বাসিন্দা সুলতান ফকির এ বছর তিন একর জমিতে আলুর চাষ করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর ধানের পাশাপাশি আমি আলু চাষ করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহযোগিতা পাইনি। যারা আলুর চাষ করেনা তারাও অনেকেই সহযোগিতা পায়, কিন্তু আমি পাইনা। স্থানীয় যে সব ওষুধ সরবরাহকারী আছেন, তাদের থেকে বেশি দামে আমাদের ওষুধ কিনতে হয়।

একই এলাকার হেনারা বেগম নামে এক নারী আলু চাষি বলেন, এ বছর আলুর জন্য খেত প্রস্তুত করে সার সংকট থাকায় এক সপ্তাহ পর সার পেয়েছি। সর্বপ্রথম আমি আলুর চাষ করলেও এক একর জমির মধ্যে চার শতাংশ জমিতে আলুর গাছ উঠেছে, বাকি জীমতে এখনো ওঠেনি। গতবছর আমার এক একর জমিতে আলুর চাষ করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এবছর লাভের আশায় আবারও এক একর দশ শতাংশ জমিতে আলুর চাষ করেছি। তবে সার ওষুধের দাম বৃদ্ধি থাকায় আলু উৎপাদনের পর যদি ভালো দাম পাওয়া যায় তাহলে লাভ হবে। আর যদি ভালো দাম না পাই তাহলে এবছরও লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

মোঃ মুসা নামে স্থানীয় আরেক চাষি বলেন, প্রতিবছরের মতো এবছরও একই অবস্থা আলুর চাষিদের। সিন্ডিকেটের কারণে সঠিক সময়ে সার ওষুধ এবং বীজ পাওয়া যায়না। এছাড়াও কৃষি বিভাগের যারা আছেন তারা মাঠ পর্যায়ে এসে কোনো পরামর্শও দেয় না। আর এ কারণেই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর লোকজন এসে যা বলে এবং যে ওষুধ প্রয়োগ করতে বলেন, সে অনুযায়ী আমরা চাষাবাদ করি। তবে কৃষি কর্মকর্তারা যদি মাঠ পর্যায়ে আসতো তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো।

কালমেঘা এলাকার আরকে আলু চাষি মোঃ রাহাত বলেন, প্রতিবছর সার ওষুধ এবং বীজের দাম বৃদ্ধি পায়। সকল খরচ মিলিয়ে অনেক সময় আলু উৎপাদন করে আমরা লাভ করতে পারিনা। এরকম চলতে থাকলে কৃষকরা এক সময়ে বাধ্য হয়ে আলু চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।

কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে এবং ন্যায্যমূল্যে ঔষধ বিক্রি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জেলায় আলুর জন্য হিমাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রথীন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, এ বছর বরগুনায় নির্ধারিত ৯৪৫ হেক্টর জমির মধ্যে ৫৭০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ সম্পন্ন করেছেন কৃষকরা। আশাকরি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। কৃষকদের অভিযোগ আছে আলু উৎপাদনের পর ভালো দাম পাওয়া যায়না। এ কারণে একটি হিমাগার নির্মাণের বিষয়ে বিভিন্ন বিভাগে কথা বলেছি। তবে যদি স্থানীয় কোনো উদ্যোক্তা হিমাগার নির্মাণে এগিয়ে আসেন, তাহলে প্রশাসনিক ও সংশ্লিষ্ট কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কীটনাশকসহ সার ওষুধের দাম বেশি কৃষকদের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বরগুনার যে কোনো এলাকায় যদি কেউ নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে কীটনাশক, সার এবং ওষুধ বিক্রি করছেন কৃষকদের থেকে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়াও বরগুনার পাথরঘাটায় সবথেকে বেশি আলু চাষ করা হয়। এ কারণে ওই এলাকায় ডিলারদেরকে বেশি পরিমাণ সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশাকরি ওই এলাকার কৃষকদের কোনো সার সংকট হবেনা।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]