কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে বিএনপি’র প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়ার পর মনোনয়ন বদল করার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন তার সমর্থক নেতাকর্মীরা।
গত ২২শে ডিসেম্বর নিজের বাবার গড়া দল বাংলাদেশ জাতীয় দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করেন সৈয়দ এহসানুল হুদা। এরপর এ আসনে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালের পরিবর্তে সৈয়দ এহসানুল হুদাকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠেন ইকবাল সমর্থকরা। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এ আসনের রাজনৈতিক মাঠ। লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে বাজিতপুর বাজারে জনসভা ও জনসভা শেষে মশাল মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী নেতাকর্মীরা।
প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তনের ঘোষণা আসার পর পরই গত ২৪শে ডিসেম্বর রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ইকবাল সমর্থকরা। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কারণে একদিন বিরতি দিয়ে ফের মাঠে নেমেছেন তারা। সৈয়দ এহসানুল হুদার মনোনয়ন পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বাজিতপুর-নিকলীতে আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাজিতপুর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির।
শুক্রবার বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইকবাল সমর্থক নেতাকর্মীরা। বাজিতপুর উপজেলার সরারচরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে বাজিতপুর ও নিকলী দুই উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে বিএনপি’র প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিলো। এই মনোনয়নে তৃণমূলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেছিলো। স্বভাবতই এ আসনের আপামর জনতা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। কিন্তু জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে মনোনয়ন পরিবর্তন করে সৈয়দ এহসানুল হুদার মতো একজন গণবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিকে বিএনপি’র মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া এই সিদ্ধান্তে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ নির্যাতিতদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। বাজিতপুর-নিকলীর তৃণমূল নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া এই সিদ্ধান্ত মানবে না। রাজপথেই তারা মনোনয়নের ফয়সালা করবে।
ইকবালকে বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে পেতে নেতাকর্মীরা প্রয়োজনে রক্ত দিবে, এরপরও রাজপথ ছাড়বে না। কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, দলীয় ত্যাগী ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে উপেক্ষা করে বিতর্কিত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে বিএনপি’র ভিত্তি দুর্বল করা হচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তাই দলের স্বার্থেই মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে মনোনয়ন দিতে হবে।
কর্মসূচিতে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল বিএনপি’র দুর্দিনের নেতা। তিনি বাজিতপুর-নিকলীর বিএনপি’র প্রাণভোমরা। দুই যুগেরও বেশি সময় তিনি বাজিতপুর-নিকলীর গণমানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
তাকে ছাড়া বাজিতপুর-নিকলীর মানুষ কাউকেই দলীয় প্রার্থী হিসেবে মেনে নিবে না। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূলের নেতাকর্মীদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নিয়ে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালের হাতে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দিবেন।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর