• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩৪ সেকেন্ড পূর্বে
ইয়ানুর রহমান
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:২৯ রাত

'পুরো বাংলাদেশটাই দুর্নীতিগ্রস্ত-যা পারেন লেখেন'

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

“পুরো বাংলাদেশটাই দুর্নীতিগ্রস্ত-লেখেন! যত পারেন লেখেন! দেশের সব পত্রিকা লিখেছে, তাতে কী হয়েছে?” এভাবেই সাংবাদিক পরিচয় জানতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শার্শা উপজেলা প্রকৗশলী ছানাউল্লাহ হক।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে যশোরের শার্শা উপজেলার বহুল আলোচিত সাতমাইল-গোগা ১০ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাষায় কথা বলেন তিনি।

প্রকৌশলী ছানাউল্লাহ হক বলেন, “যারা কাজের মান খারাপ হওয়ায় রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল-তারাই আবার টাকা খেয়ে কাজ চালু করেছে। আমি দশ দিন পরে রিপোর্ট দেবো, সব ঠিক আছে। কোথাও কোনো গরমিল নেই।” নিম্নমানের পাথর, ময়লাযুক্ত খোয়া, পুরনো সামগ্রী, রড ও সিমেন্টের মাত্রা কম থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দেন-“এগুলো আমলে আসবে না।”

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মতো ‘রুচি নেই’ বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন। বলেন, “যা লেখার লিখেছেন, আরও লেখেন-এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মতো রুচি আমার নেই।”

এদিকে, কথোপকথনের মধ্যেই এলজিইডির আরেক কর্মকর্তা প্রকৌশলীর কক্ষে প্রবেশ করে জানতে চান-এই সড়ক নির্মাণ নিয়ে কোন সাংবাদিক তার কাছে ফোন দিয়েছেন। ওই সাংবাদিকের নাম্বার চাইতে গিয়ে তিনি বলেন, “ঠিকাদারের লোক এসেছে-এদের দিয়ে শাসিয়ে দিচ্ছি।” প্রকৌশলীল কক্ষে চা পরিবেশন করা হলেও এমন পরিবেশে তা গ্রহণ না করেই কক্ষ ত্যাগ করেন উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিকরা।

পরে এ বিষয়ে কথা হয় শার্শা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক শাহারিয়ার মাহমুদ রঞ্জুর সঙ্গে। তিনি জানান, স্থানীয়দের পক্ষ থেকে কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “একদিন কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু শুক্র ও শনিবার সরকারি বন্ধের দিনে কীভাবে আবার অভিযুক্ত সড়কে সিসি ঢালাই শুরু হলো-তা আমার জানা নেই।” এ ধরনের উন্নয়নকাজে প্রকৌশলীর দপ্তরের আরও আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে সাতমাইল-গোগা সড়কের বসতপুর বাজার এলাকায় প্রায় ৩৫০ মিটার সিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। ঢালাইয়ের কয়েকদিন পরই পায়ের আঙুল দিয়ে সামান্য গুতো দিলেই উঠে আসছিল সিমেন্ট-বালির সঙ্গে মেশানো খোয়া। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী ও বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরের হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ করা হয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই পুনরায় সিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবারও নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানীয়, জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উপজেলা প্রকৌশলী ছানাউল্লাহ হক।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নড়াইলের ‘ইডেন এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে কাজটি দেওয়া হলেও বাস্তবে যশোরের সাঈদ নামের এক ঠিকাদার কাজটি করছে। তার হাত অনেক লম্বা।”

শার্শা উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রকল্প উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বাগআঁচড়া ইউনিয়নের সাতমাইল থেকে গোগা বাজার পর্যন্ত ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন বাজার এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সিসি ঢালাইয়ের কাজ অর্ন্তভুক্ত।

ইতোমধ্যে সেতাই বাজারের কিছু অংশে কাজ শেষ হলেও বসতপুর স্কুল মোড় থেকে বাজারের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ মিটার সিসি ঢালাইয়ের কাজ চলমান।

তবে কাজের শুরু থেকেই নির্ধারিত নকশা ও মানদন্ড অনুসরণ না করে নিম্নমানের রড, ইট ও পাথরের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত অনুপাতে সিমেন্ট ব্যবহার না করায় ঢালাইয়ের গুণগত মান নিয়ে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা প্রকৌশলী ছানাউল্লাহ হকের প্রত্যক্ষ যোগসাজশেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমন নিম্নমানের নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ঢালাইয়ের স্থানে সামান্য চাপ দিলেই উঠে আসছে ইটের খোয়া- পুরো প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে।

মাসুম/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com