• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১২ মিনিট পূর্বে
মোহাম্মদ ফয়সাল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩৩ রাত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে চট্টগ্রামে শোকের ছায়া, বিভিন্ন মহলের শ্রদ্ধা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর চট্টগ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুর খবরে বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করতে থাকেন।

মঙ্গলবার সকালে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপি ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের শোকার্ত নেতাকর্মীরা নগরীর নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন। দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। সকালে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনায় কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদেও দোয়া-মোনাজাত হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি আজীবন দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন দেশ ও জাতির জন্য নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং গণতন্ত্র, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার মৃত্যুতে দেশ একজন মহান অভিভাবক ও অভিজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ককে হারাল। তার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত।’ মেয়র দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনগণকে এই শোকাবহ সময়ে সংযম, ধৈর্য ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রাখার আহ্বান জানান।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম অঞ্চল দায়িত্বশীল সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এই শোকের মুহূর্তে আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজন, দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন। জাতি আজ একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী নেত্রীকে হারাল। ঐক্যবদ্ধ দেশ ও জাতি গঠনে বেগম খালেদা জিয়ার অগ্রণী ভূমিকা সমগ্র দেশবাসী আজীবন স্মরণ রাখবে শ্রদ্ধার সাথে।

বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শোকবার্তায় তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতার জন্য, মানবাধিকারের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করে গেছেন। জেল কেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন কিন্তু কখনো আপোস করেননি। তিনি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্তের প্রতীক, ঐক্যের প্রতীক। তিনি সংগ্রামী, আপসহীন, প্রজ্ঞাবান, বিচক্ষণ নেত্রী। এই মহীয়সী নারীর মৃত্যুতে জাতি হারালো একজন অভিভাবক, দেশ হারালো একজন মহান রাষ্ট্রনায়ককে। আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য ইতিহাস দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্মরণীয় করে রাখবে। তাঁর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত, মর্মাহত ও ব্যথিত।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের মানুষের প্রাণের নেত্রী। সারা জীবন তিনি দেশ ও জাতির ভাগ্য উন্নয়নে সংগ্রাম করে গেছেন। শহীদ জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রামকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভালোবাসতেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান ও রাউজান-রাঙ্গুনিয়ার সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। শোক বার্তায় সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার পক্ষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির আতঙ্ক দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে অবিনাশী মনোবল ও জনগণের অকুন্ঠ সমর্থন এবং ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন একাগ্র চিত্তে। শত জুলুম-নির্যাতন সত্ত্বেও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ছেড়ে কোথাও যাননি তিনি। আমার নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের সুযোগ্য সহধর্মিনী হিসেবে গণমানুষের দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কে স্বীয় দক্ষতা ও যোগ্যতাবলে পরিচালনা করে জনগণের ভালোবাসায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছেন বারবার। আধিপত্যবাদী ও ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বেগম জিয়ার আপোষহীন ঐতিহাসিক ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। পৃথিবীর বুকে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি মাটিতে শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হবে বেগম খালেদা জিয়ার নাম। সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, মহান আল্লাহ যেন বেগম খালেদা জিয়াকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।"

বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম–২ (ফটিকছড়ি) সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য অধ্যক্ষ নুরুল আমিন। শোকবার্তায় অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, বহু দলীয় গণতন্ত্রের রূপকার, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীরউত্তম)-এর সহধর্মিণী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অবিচল ও সাহসী নেতৃত্বের প্রতীক। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। গণতন্ত্র ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের চিরবিদায়ে জাতি হারালো একজন মহীয়সী ও মহামূল্যবান নারীকে, যার অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন। একই সঙ্গে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, দলীয় নেতাকর্মী ও অসংখ্য সমর্থকের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম -১০ ডবলমুরিং-হালিশহর- পাহাড়তলী বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাঈদ আল নোমান শোক প্রকাশ করেন। তিনি শোক বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের পরম আপন মানুষটি আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন চিরতরে। বাবার মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে বাবার সাথে দেশনেত্রীর দোয়া নিতে গিয়ে যে পরম মমতা, উপদেশ ও নির্দেশনা পেয়েছি তা আমার আমৃত্যু চলার পাথেয়। চরম অসুস্থতার মাঝেও নিজের কথা না ভেবে দেশের কথা, জনগণের কথা ভেবে ব্যাকুল হতে দেখেছি স্বচক্ষে।

তিনি বলেন, আমৃত্যু দেশের সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করে যাওয়া এমন একজন আপোষহীন, দৃঢ়চেতা ও দরদী ব্যক্তিত্বের নেত্রী ছিলেন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। নিতান্ত একজন গৃহবধূ থেকে আপোষহীন নেত্রী, আপোষহীন নেত্রী থেকে ঐক্যের প্রতীক হয়ে দেশনেত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন এদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। এমন একজন আপোষহীন, দেশপ্রেমী, মানবপ্রেমী নেত্রীর প্রয়াণ দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি। ওনার একটি আলাপ আমার আমৃত্যু মনে থাকবে, যা ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান এক শোকবার্তায় বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমরা মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। সেইসঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। বেগম জিয়া ছিলেন একজন সাহসী দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি মুসলিম নারী। ২০১৩ সালে আধিপত্যবাদ-প্রযোজিত শাহবাগের ফ্যাসিবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী জমায়েতকে তিনি নাস্তিকদের চত্বর আখ্যা দিয়েছিলেন। হেফাজতের ৫ মে’র ঐতিহাসিক ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে আলেম-ওলামার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। ইসলামী মূল্যবোধ, দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে তার আপসহীন রাজনৈতিক অবস্থান ও ভূমিকা সবসময় জনগণকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। মৃত্যুর আগে তিনি পুরো জাতির অবিসংবাদিত রাজনৈতিক অভিভাবকে পরিণত হয়েছিলেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডক্টর্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ। এক যৌথ শোক বার্তায় ড্যাব চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন এদেশের গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী। দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব এবং মানুষের অধিকার আদায়ে তাঁর ত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ কেবল একজন মহান নেতাকেই হারায়নি, বরং হারিয়েছে এক মমতাময়ী অভিভাবককে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নারী শিক্ষা ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। জাতীয়তাবাদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাঁর বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর সবসময় দেশবাসীকে সাহস জুগিয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব। শোকবার্তায় প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কেবল একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক। দেশ ও জাতির সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তিনি সবসময় ছিলেন আপসহীন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান এবং সংগ্রাম দেশ ও জাতির কাছে আজীবন চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এসময় তার রুহের মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। এরআগে শোকসভায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও সম্পাদক গোলাম মাওলা মুরাদের সঞ্চালনায় শুরুতেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন ও তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। শোক পালনকালে ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দ কালো ব্যাজ ধারণ করেন।

সাংবাদিকদের সংগঠন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে), চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এবং টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (টিসিজেএ) শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। শোক বিবৃতিতে সিএমইউজের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান বলেন, ‘বহু উত্থান‑পতনের মধ্য দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন, আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াই, সংসদীয় রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় তার ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি ছিলেন জাতীয় ঐক্যের প্রতীক ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। এ শোক শুধু একটি দলের নয়—সমগ্র জাতির। দেশে মুক্ত গণমাধ্যমের চর্চায় বেগম খালেদা জিয়ার অবদান কৃতজ্ঞচিত্রে স্মরণ করছে সিএমইউজে।’

সিইউজের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ শোকবার্তায় বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক অবিস্মরণী ও দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব। রাষ্ট্র পরিচালনা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বহুদলীয় রাজনীতির বিকাশে তার অবদান ইতিহাসে অসামান্য। একজন সাহসী ও আপসহীন রাজনৈতিক চরিত্র হিসেবে তিনি দেশের মানুষের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে আজন্ম সংগ্রামী নেত্রী। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক রূপান্তরে তিনি এক অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার মৃত্যুতে জাতি এক অভিভাবকসুলভ নেতৃত্বকে হারাল।’

টিসিজেএ, চট্টগ্রামের নির্বাহী কমিটির সভাপতি শফিক আহমেদ সাজীব, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী আকবর, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম চৌধুরী মামুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর, অর্থ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বাসু দেব, দফতর সম্পাদক পারভেজ রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাইমুন আল মুরাদ, নির্বাহী সদস্য নুর হাসিব ইফরাজ, সাইফুল ইসলাম ও রবিউল হোসেন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া এক শোকবার্তায় বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিত্ব। গণতন্ত্রের বিকাশ, সাংবিধানিক ধারার সংরক্ষণ এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার ইন্তেকালে দেশ একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হারাল, যা জাতীয় জীবনে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করেছে।’

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান শোকবার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দেশ ও জাতির প্রতি তার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রেও অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করেন, যা বাংলাদেশের নারী শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।’

বেসরকারি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, উপাচার্য ড. শরীফ আশরাফউজ্জামান, শোকবার্তায় বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আপসহীন নেত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে এবং দেশ গঠনে অসামান্য ভূমিকা রাখায় জাতি তাকে চিরদিন মনে রাখবে।’

এছাড়া মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এর উদ্যোগে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনায় কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

মাসুম/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]