দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্য বদলে দিতে এবার বড় চাল চালল চীন। পাকিস্তানের বিমান বাহিনীকে শক্তিশালী করতে দেশটিকে ৪০টি পঞ্চম প্রজন্মের অত্যাধুনিক জে-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেট সরবরাহের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই এই খবর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পেন্টাগনের ‘গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সামরিক ও নিরাপত্তা উন্নয়ন-২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আঞ্চলিক সামরিক আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে বেইজিং ইসলামাবাদের হাতে এই ঘাতক যুদ্ধবিমান তুলে দিচ্ছে। চীনের এই পদক্ষেপকে মার্কিন বিশেষজ্ঞরা ‘কৌশলগত’ এবং ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী’ বলে বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাফাল যুদ্ধবিমানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই পাকিস্তান তড়িঘড়ি করে চীনের এই পঞ্চম প্রজন্মের প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনীতে থাকা ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমানগুলো সাড়ে চার প্রজন্মের। অন্যদিকে চীনের জে-৩৫ হলো পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান, যা রাডারের চোখ ফাঁকি দিতে সক্ষম। পেন্টাগনের দাবি, ভারত যখন রাফাল মোতায়েন শুরু করে, তখনই পাকিস্তান এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ বাড়ায়। চীনের তৈরি এফসি-৩১ এর উন্নত সংস্করণ হলো এই জে-৩৫, যা সক্ষমতার দিক থেকে মার্কিন এফ-৩৫ এর কাছাকাছি বলে দাবি করেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
পেন্টাগনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, চীন বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে। পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়া সত্ত্বেও চীন তাদের এই বিশাল প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহের ঝুঁকি নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন মূলত পাকিস্তানের বাজারকে ব্যবহার করে তাদের প্রতিরক্ষা শিল্পের সক্ষমতা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চায়। জে-৩৫ ছাড়াও চীন পাকিস্তানকে জে-১০সি এবং যৌথভাবে তৈরি জেএফ-১৭ থান্ডার সরবরাহ করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীকে পুরোপুরি ‘চীনা নির্ভর’ করে তুলছে।
ভারতের জন্য এই খবরটি বিশেষ উদ্বেগের কারণ এই যে, ভারতীয় বিমান বাহিনী বর্তমানে নিজস্ব পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির কাজ করছে, যা হাতে পেতে এখনো বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। এদিকে পাকিস্তান যদি দ্রুত এই ৪০টি স্টেলথ জেট হাতে পায়, তবে আকাশযুদ্ধের শক্তিতে তারা সাময়িকভাবে ভারতের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে।
পেন্টাগন জানিয়েছে, পাকিস্তানের পাইলটরা ইতোমধ্যে চীনে গিয়ে এই বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন, যা থেকে স্পষ্ট যে সরবরাহ প্রক্রিয়া খুব দ্রুতই শুরু হতে যাচ্ছে।
সুত্র: আনন্দবাজার
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর