নীলফামারীতে কাবিখা’র টাকা আত্বসাৎ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৬, ০৫:১২ পিএম

নীলফামারীতে সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত কাবিখা’র ১১ মেট্রিক টন চাল আত্বসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় দিন দিন জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। সরকারী বরাদ্দ আত্বসাত এর ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেছে অলিয়ার রহমান নামের এক এলাকাবাসী। মামলাটি দুদক’কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ মামলা দায়েরের পর সোহরাব নামের স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা সহ মামলার বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সোহরাব স্থানীয় এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার আশ্রয়ে থেকে এ কর্মটি করছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ।

২০১৪-১৫ অর্থ বছরে জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা বিধৌত বন্যা কবলিত একটি এলাকা খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের ২য় পর্যায়ের ৯ নং প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৩ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে গমের সরবরাহ না থাকায় ১১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। যার সরকারী মূল্য ৩,৯০,২৯১ টাকা। এ প্রকল্পের অধীনে ১ নং ওয়ার্ডের জনৈক নুরুল ইসলামের বাড়ী হতে আজমের বাড়ীর পাশ দিয়ে মেহের আলীর বাড়ীর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার। এ রাস্তাটি সংস্কার হলে তিস্তা নদীর বন্যার পানি ওই এলাকার রোপা আমন সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত বন্যার হাত হতে রক্ষা সহ সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতি হতো।

সরকারী বরাদ্দের পরে ডিমলা উপজেলার তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিয়ার রহমানের যোগসাজশে প্রকল্প কমিটি, প্রকল্প চেয়ারম্যান তফেল উদ্দিন সহ অপরাপর সদস্যরা কোন প্রকার কাজ না করেই প্রকল্পের সমুদয় টাকা আত্বসাৎ করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ২৯/০৭/১৫ তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম ০৬/০৮/১৫ তারিখে তদন্তের জন্য অভিযুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকেই আবার তদন্তের নির্দেশ দেন। প্রশ্ন উঠেছে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকেই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইউএনও’র তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান কোন প্রকার তদন্ত না করেই টালবাহানা করে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন।

এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ২৭/০৮/১৫ তারিখে নীলফামারী জেলা প্রশাসক বরাবর অপর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অদ্যাবদি অভিযোগের কোন প্রকার তদন্ত না হওয়ায় নীলফামারী জেলা জজ আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৯/২০১৬। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরন করেন। অভিযোগ দাখিল ও মামলা দায়েরের পর ওই কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের বাচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে সোহরাব নামের স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা। ওই আওয়ামীলীগ নেতা পান্নি উন্নয়ন বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। এমনকি কাজটি করা হয়েছে বলে স্থানীয় পর্যায়ে নানাভাবে হুমকি ধামকি ও সাক্ষ্য নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ। বর্তমানে সোহরাবের নেতৃত্বে বিবাদমান ওই সড়কে মাটি দেয়ার কাজ চলছে। এলাকাবাসীর নানা প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ফেলছেন বলে দাবী করেন। এলাকাবাসীর দাবী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে সোহরাবের যোগসাজশে তিনি মাটি ভরাটের কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বর্তমানে ডোমার উপজেলায় কর্মরত মশিয়ার রহমান জানান, এ ব্যাপারে এমপি সাহেব জানেন আমি নই।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: