চিকিৎসকের অস্পষ্ট লেখা প্রেসক্রিপশনে ভুল ওষুধ দিচ্ছে বিক্রেতারা

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৬, ০৮:৩০ পিএম

পাবনায় চিকিৎসকদের লেখা অস্পষ্ট প্রেসক্রিপশন বুঝতে না পেরে অনেক সময়ই ভুল ওষুধ দিচ্ছেন ওষুধ বিক্রেতারা। আবার সেই প্রেসক্রিপশন বুঝতে সমস্যায় পড়ছেন রোগী বা তাদের স্বজন। ফলে নিয়ম-কানুন ও ওষুধ সেবন নিয়েও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। এদিকে, চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে হাতের লেখার মান নিয়ে রোগী ও ওষুধ বিক্রেতাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অসন্তোষ নিরসনে নেই তেমন কোনো তদারকি। ওষুধ বিক্রেতারা চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনের অনেক আইটেম বুঝতে না পেরে ভুল ওষুধ দিচ্ছেন। এতে করে ভুল চিকিৎসায় অনেক রোগী মৃত্যুর মুখে চলে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রোগী তার সঠিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে চিকিৎসকদের অস্পষ্ট লেখা প্রেসক্রিপশন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ বিষয়ে এখনই স্বাস্থ্য বিভাগের মনিটরিং দাবি ভুক্তভোগীদের।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, একজন রোগী সঠিক চিকিৎসা প্রাপ্তির জন্য অবস্থা বুঝে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহন করেন। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকলে, স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন না করে নিজেই ওষুধ দিয়ে থাকেন। আর যদি কোন রোগীর অবস্থা বেশ জটিল বা গুরুতর হয় তাহলে তিনি নিজেই অথবা তার স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান অথবা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বরনাপন্ন হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্লিনিক গুলোতে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির জন্য গিয়ে সেখানে কর্মরত সকল ডাক্তার রোগীর পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে ব্যবস্থাপত্র লিখে রোগীর হাতে ধরিয়ে দেন। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে পাশের কোন ফার্মেসীতে ওষুধ কিনতে গিয়েই প্রেসক্রিপশনের অনেক আইটেম লেখা বিক্রেতা বুঝতে না পেরে ভুল ওষুধ দিয়ে দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে রোগী যেমন প্রতারিত হচ্ছেন, তেমনি হচ্ছেন ভুল চিকিৎসার শিকার।

এছাড়াও প্রেসক্রিপশনে ওষুধ খাবার নিয়ামাবলী নিয়েও থাকে এক ধরনের বড় জটিলতা। সেক্ষেত্রেও অনেক সময় বোঝার ভুলে ওষুধ সেবন অনিয়মতান্ত্রিক হয়ে যাওয়ায় রোগীর বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। বেশি প্রতারনার শিকার হচ্ছেন গ্রামের এলাকার রোগীরা। তাদের পড়াশোনা ও অক্ষরজ্ঞান কম থাকায় অনেক সময় ভুল ওষুধ নিয়েও সচেতনতার অভাবে সেটাই সেবন করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
আমেরিকার একটি গবেষনায় উঠে এসেছে, প্রেসক্রিপশন ভুল ওষুধ বিতরণ-বিক্রয়ের ভয়াবহতা সম্পর্কে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি বছর সারা বিশ্বে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন বুঝতে না পেরে ভুল চিকিৎসায় ৭ হাজারেরও বেশি রোগী মারা যায়। এসকল ক্ষেত্রে প্রেসক্রিপশনে অস্পষ্ট ভাষায় ওষুধ লেখা চিকিৎসকদের যেন একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও স্পষ্ট করে লিখতে পারছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ওষুধ বিক্রেতা চিকিৎসকদের লেখা প্রেসক্রিপশন বুঝতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় বলে জানান।
এসকল বিষয়ে পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মো: তাহাজ্জেল হোসেন বলেন, যে চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন লিখবেন তাকে স্পষ্ট করে সঠিকভাবে লিখবেন, যাতে রোগী বা তার স্বজন বুঝতে পারেন। আর ওষুধ বিক্রেতারা যদি কোনো চিকিৎসকের লেখা বুঝতে না পারেন, বা বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে ওই চিকিৎসকের কাছে ফোন করে জেনে নেবেন। এতে ভুল ওষুধ দেয়া বা সেবন কমবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। আর আগামী মাসিক মিটিংয়ে এ বিষয়ে চিকিৎসকদের সতর্ক করে দেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: