পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নির্দেশে হত্যা ছাত্র নেতাদের!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের ভুপালে আট মুসলিম ছাত্রনেতাকে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকেই হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ফাঁস হওয়া এক অডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। নয় মিনিটের অডিও টেপটি কন্ট্রোল রুম থেকেই ধারণ করা হয়েছিল। কথিত বন্দুকযুদ্ধে আট মুসলিম ছাত্রনেতার নিহত হওয়ার ঘটনায় যখন বিতর্ক চলছে তখনই প্রকাশিত হলো এই অডিও টেপ, যা ওই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ভারতীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, রোববার রাতে ভুপালের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কেন্দ্রীয় কারাগারে এক কারারীকে হত্যা করে ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (এসআইএমআই বা সিমি) আট সদস্য পালিয়ে যান। এর ১০ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার সকালে ভুপালের অদূরে ইতখেড়ি গ্রামের কাছে মালিখেড়ায় পুলিশ ও এন্টি-টেরোরিজম স্কোয়াডের (এটিএস) সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওই কারা বন্দীরা নিহত হন বলে পুলিশ দাবি করে।
কথোপকথন শুনে মনে হচ্ছে, নয় মিনিটের ওই অডিও টেপটি পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকেই ধারণ করা হয়েছে। অডিও টেপে কথোপকথনের শুরুতেই শোনা যায়, কন্ট্রোল রুম থেকে অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়, ‘এগিয়ে যান, পিছপা হবেন না। সবাইকে হত্যা করতে হবে!’ অপর দিক থেকে ওই কর্মকর্তা জানান, ‘একেবারেই পিছপা হবো না। পুরো শেষ করতেই হবে। হ্যাঁ, আরো ফায়ারিং করছি। এখনো গুলি চালানো হচ্ছে।’
অডিও টেপে গুলি চালানোর প্রচণ্ড শব্দ শোনা যায়। কন্ট্রোল রুম থেকে এরপর বলা হয়, ‘ঠিকঠাক জায়গা থেকে গুলি চালিয়ে যান। এখান থেকে আরো ফোর্স যাচ্ছে। গুলি চালিয়ে যান। দেখবেন যেন ক্রসফায়ার না হয়। তাই অবস্থান ঠিক রাখতে হবে।’
দায়িত্বপ্রপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘চৌহান সাহেব, পাঁচজন নিহত হয়েছে, পাঁচজনের গুলি লেগেছে।’
কন্ট্রোল রুম ‘একদম ঠিক আছে। আমরা আসছি।’ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ‘আমরা তাদের পাহাড়ের ওপরেই ঘিরে ফেলেছি।’
কন্ট্রোল রুম ‘দারুণ করেছেন। পাঁচজন কী নিহত?’
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ‘হ্যাঁ, পাঁচজন নিহত।’
কন্ট্রোল রুম, ‘শাবাস! বাকিদের আর ছেড়ে দিবেন না।’ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ‘এখানে দুই-তিনটা অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে হবে।’
কন্ট্রোল রুম, ‘চিন্তা করতে হবে না। আপনার বলার আগেই অ্যাম্বুলেন্সকে খবর দেয়া হয়েছে।’
কন্ট্রোল রুম, ‘মন দিয়ে শোনেন। পাঁচজন নিহত হয়েছে। আর বাদ বাকিদেরও হত্যা করুন! এই কাজের জন্য দেশের লোক ১০ বছর ভুপাল পুলিশকে মনে রাখবে। এবার নিউজ দেখতে হবে। সংবাদমাধ্যমের এত দম নেই যে, ঠিক সময়ে পৌঁছাবে। আপনারা চিন্তা করবেন না। আমরা জলদি আসছি।’ ওই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পর পুলিশদের উল্লাস করতেও শোনা যায় ওই অডিও টেপে।
উল্লেখ্য গুলি করার সময় ওই ছাত্রনেতারা নিরস্ত্র ছিলেন বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ এটিএসের প্রধান সঞ্জিব শামি। বুধবার দাবি করেন, ‘আইনে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে, কখন পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে এবং কখন হত্যা করতে পারবে। আমি মনে করি, নিহতরা ছিল ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। আইন অনুসারে, পুলিশ যদি দেখে তাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাহলে তারা সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করতে পারে।’ শামি আরো দাবি করেন, ‘পুলিশকে ল্য করে গুলি ছোড়া না হলেও শক্তি প্রয়োগ করা যায়।’
নিহতদের ময়নাতদন্ত থেকে দেখা যায় যে, তাদের প্রত্যেক শরীরে বেশির ভাগ গুলিই কোমরের ওপরে বিদ্ধ হয়েছিল।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: