প্রভাবশালী দখলদারের কবলে অস্থিত্ব সংকটে চৌমুহনী খাল

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৬, ০২:০৬ এএম

শতবর্ষের ঐতিহ্যের ধারক বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনী। চারটি খালের মোহনায় প্রতিষ্ঠিত ও নাম করনকৃত এ বাণিজ্যক কেন্দ্র চৌমুহনীতে দখলদারদের কবলে পড়ে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। খাল দখলের চিত্রটা এক সময় ছিল বাঁশ আর কাঠ দিয়ে তৈরি অস্থায়ী স্থাপনা মাধ্যমে। বর্তমানে চিত্র বদলেছে, বদলেছে দখলের প্রক্রিয়া দখলদাররা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। খাল দখলকরে দালান নির্মাণের করছে গড়ে তুলছে স্থায়ী অবকাঠামো। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রনাধীন প্রায় এক’শ মিটার প্রস্থের এই খাল এখন কোন কোন স্থানে ২৫-৩০ মিটারে নেমে এসেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে জেলার দক্ষিণের উপজেলা গুলো সম্পূর্ণ জলাবদ্ধ হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক আকারে কৃত্তিম বন্যা দেখা দেয়।

আর মারাত্মকভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হয়। বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনী একসময় জলপথে বাণিজ্যের জন্য সারাদেশে বিখ্যাত ছিলো। দেশের বিভিন্ন স্থানই নয় সুদূর কলকাতা থেকে বড় বড় নৌকা ও সাম্পানে করে মালামাল আসতো বলে জানাযায়। পর্যায়ক্রমে এখানে ৬টি নৌকা ঘাট স্থাপিত হয়। চৌমুহনীর ওপর দিয়ে প্রবাহমান রয়েছে ওয়াপদা খালের দুটি অংশ দক্ষিনে চৌমুহনী-আটিয়াবাড়ি খাল এবং পূর্বে চৌমুহনী-ছাত্রাপাইয়া খাল। এছাড়া পূর্বে প্রবহমান রয়েছে চৌমুহনী-ফেনী খাল। একসময় এই খালগুলো ছোটখাটো নদীর আকৃতি থাকলেও গত দুই দশক ধরে খালের দুই পাশ থেকে দখলদারদের কবলে পড়ে পর্যায়ক্রমে এই খালগুলো নালায় পরিণত হয়েছে। প্রথম দিকে দখলদাররা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে খালের ওপর ঘর তুললেও এখন দালান নির্মাণের মাধ্যমে স্থায়ী রূপ দেওয়া হচ্ছে দখল কার্যক্রমকে। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, দখল প্রকৃয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে খাল পাড়ের দোকান মালিকরা।

চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের সামনে থেকে দক্ষিণ বাজার পর্যন্ত এই অবস্থা চলছে। এছাড়া চৌমুহনী বড়পুল, গোলাবাড়িয়া পুল এবং দক্ষিণ বাজার পুলের দুই পাশে দখলদাররা এতোটাই বেপরোয়া যে খাল খুঁজে পাওয়াও কষ্টকর। এছাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে চৌমুহনীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত নোয়াখালী খালে পানি প্রবাহে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করছে। দখল এবং ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে বর্ষা মওসুমে পানি নামতে না পারায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ি উপজেলার বিস্তীর্ন অঞ্চল জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে। ব্যবসায়ীদের মতে দখল যেভাবে চলছে একদিন হয়তো চৌমুহনীতে খাল খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ব্যবসায়ী ও সচেতন মহলের প্রশ্ন- খাল দখল করতে বা খালের উপর এই অবৈধ স্থাপনাগুলো তৈরীতে কারা সহযোগীতা করে ? দেখলে বুঝতে বাকী থাকেনা খালের ওপর নির্মিত স্থাপনাগুলো অবৈধ। তাহলে প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের কাজ কি? সীমাবদ্ধতা কোথায়?

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: