'তিস্তা আমাদের অধিকার, সামরিক চুক্তি ভারতের আবদার'

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০১৭, ০৮:২০ পিএম

অনলাইন ডেস্ক:২০১১ সালে ইন্ডিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোমোহন সিং ঢাকা সফর করেছিলেন। তখন এই সফরের আগে একটি জনসভায় ২০ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছিলেন, তিস্তা চুক্তি না হলে ট্রানজিট নয়। এর পরের দিন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছিলেন। এর শিরোনাম ছিল ‘তিস্তা আমাদের অধিকার, ট্রানজিট ওদের আবদার’। তিস্তার সাথে অন্যকিছুর তুলনা চলে না। আমাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের সাথে জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত ট্রানজিটের তুলনা হতে পারে না। সেটা তিনি স্পষ্ট করেছিলেন এ প্রতিবেদনে।

তখন ট্রানজিট নিয়ে চুক্তি হয়েছে। তিস্তা নিয়ে কোন সুরাহা হয়নি। তারপরও কারো মুখে কোন প্রতিবাদ নেই। প্রতিরোধের প্রশ্নতো অনেক দূরে। পরবর্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া সফর করেছেন। তখনো অনেক চুক্তি হয়েছে। চট্রগ্রাম-খুলনা সমূদ্রবন্দর সহ অনেক সুবিধা ইন্ডিয়াকে দিতে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু তিস্তা হয়নি।

এবার সর্বশেষ ভারত তিস্তার সাথে নিরাপত্তা চুক্তির শর্ত দিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই হয়তো তোলা হয়েছে। কেননা তিস্তার পানি তারা দেয়নি। হয়তো দেবে না। এটা বুঝতে পেরেই সুকৌশলে বাংলাদেশ সরকার এমন একটা শ্লোগান বাজারে ছেড়েছে বলে ওয়াকিবমহল মনে করছে।

একজন সাধারণ চিন্তক হিসেবে আমারও মনে হয়, এবারো তিস্তা চুক্তি হবে না। হলেও সেখানে বাংলাদেশের অধিকার খর্ব হবে। তবে সামরিক নিরাপত্তা চুক্তি কিন্তু ভারত করিয়ে নেবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা রক্ষা করতে পারবে? তিনি নির্বাচিত না হলেও যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন, সেহেতু তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে। অন্যথায় জাতি তাকে ক্ষমা করবে না।

আমি বলতে চাই, আমাদের অধিকার তিস্তা নদীসহ ৫৪ অভিন্ন নদীর পানি বাংলাদেশের মানুষ পেতে চায়। আমাদের একটু নেপালের দিক তাকানো উচিত। গত সপ্তাহে নেপাল সীমান্তে ইন্ডিয়ান বিএসএফ একজন মানুষ খুন করেছে। তাতে পুরো নেপাল জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রতিবাদ বিক্ষোভের ফলে ইন্ডিয়া প্রকাশ্যে দু:খ প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু আমাদের সীমান্তে প্রতিনিয়ত মানুষ খুন করে ইন্ডিয়া। এটা নিয়েও আমাদের নতুন প্রজন্মকে কথা বলতে হবে। স্বাধীনতার চেতনা কাকে বলে সেটা একটু শিখতে হবে নেপাল থেকে।

আমি নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে বলতে চাই, তিস্তা আমাদের অধিকার, সামরিক চুক্তি ভারতের আবদার। এই আবদার মেনে আমরা, নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যদের হাতে তুলে দিতে চাই না। এ বিষয়টির দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নজর দিতে হবে। অন্যথায় জাতি তাকে ক্ষমা করবে না। আওয়ামী লীগও আরো জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।


লেখক: ফরিদুল ইসলাম (যুক্তরাজ্য প্রবাসী মানবাধিকার ও রাজনৈতিক কর্মী)।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: