ফের গুজরাটে দাঙ্গায় ২ মুসলিম নিহত, ৯০ বাড়িতে আগুন

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৭, ০১:১৩ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের গুজরাটের আবারওশুরু হয়েছে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা। সামান্য কথা কাটাকাটির জের ধরে তৈরি করা দাঙ্গায় নিহত হয়েছে ২ জন। আর এরই মধ্যে ৯০ টি মুসলিম বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহত দুইজনের বাড়ি গুজরাটের পাটান জেলার চানসামা থানায়। ওই এলাকায় অন্তত আরও ১২ জন আহত হয়েছে।

একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঠাকুর এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের দুই ছাত্রের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সামান্য বসার জেরে ওই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। শনিবারের এ ঘটনার জেরে ওইদিন সন্ধ্যায় চানসামা থানার ভাদাভালি গ্রামের ঠাকুর এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা বেধে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তীর্থ রাজ বলেন, দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটির পর ঠাকুর সম্প্রদায়ের ওই ছাত্র প্রায় ৫ সহস্রাধিক লোক জড়ো করে। তারা হামলা চালায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর। এ ঘটনায় নিহত হয়েছে ২ জন। আহত ১২ জনের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এছাড়া প্রায় ৯০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ বছর বয়সী ইব্রাহিম বেলিম নামে এক ব্যক্তির পরিচয় জানা গেছে। তিনি ভদাবলি গ্রামের বাসিন্দা। ওই ঘটনায় মুসলিম বাসিন্দারা প্রাণের ভয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে পালিয়ে গেছে এবং কিছু বাসিন্দা ধরপুর গ্রামের কাছে এক মেডিকেল কলেজে আশ্রয় নিয়েছে। ভদাভলি গ্রামের ওই ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ওই ঘটনায় হামলাকারীরা মুসলিম সম্প্রদায়ের ৯০টি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালানোর পাশাপাশি তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা বাড়ির সামনে থাকা প্রায় ডজনখানেক যানবাহনেও আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশ লাঠি এবং কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। অবস্থা আয়ত্তে না এলে পুলিশ শূন্যে গুলি ছোড়ে। এ সময় এক যুবক নিহত হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত হন এবং সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। আগুন নেভাতে ১০টি ফায়ার ব্রিগেডের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গায় ৫০০০ মুসলমান নিহত হয়েছিল বলে ভারতের মুসলমানরা মনে করেন। সেখানে হাজারও মুসলিমকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়।
২০০২ সালের ওই দাঙ্গার সময় মুসলিম মহিলারা পুলিশের কাছে তাদের ইজ্জত রক্ষার আবেদন জানালে পুলিশ বলেছিল, ‘তোমাদের তো শেষমেষ মেরেই ফেলবে। তার আগে ইজ্জত থাকলো কি চলে গেল তাতে কি’।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: