‘খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তোমরা একযোগে কাজ করবে’

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০১:১৬ এএম

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘কৃষি খাতে আজ যে অভাবনীয় সাফল্য দৃশ্যমান, এর পিছনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটসহ অন্যান্য কৃষিবিদগণ, যারা নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশ উপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ সব পর্যায়ে তা দ্রুত হস্তান্তর ও বিস্তারের কাজে সারাক্ষণ নিজেদের নিয়োজিত রাখছেন।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।

কৃষিবিদদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গোটা দেশ আজ তোমাদের দিকে চেয়ে আছে। সমগ্র জাতি তোমাদের ঘিরে স্বপ্ন দেখে। তাই দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তোমরা একযোগে কাজ করবে।”

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “অতি সম্প্রতি এখানে বেশ কিছু শিক্ষা ও গবেষণা উদ্যোগ নেওয়া হয়। যেগুলোর মধ্যে Inter-disciplinary Centre for Food Security (ICF) অন্যতম। এই সেন্টার থেকে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে স্মাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে এবং একটি Safety Lab গড়ে তোলা হয়েছে।

এছাড়া “হাওড় ও চড় উন্নয়ন ইনস্টিটিউট” স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে এবং কক্সবাজারে “সামুদ্রিক মাৎস্য বিজ্ঞান, মাঠ গবেষণা ও শিল্পকেন্দ্র” স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলেছে। এগুলি নিঃসন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের গতিশীলতার পরিচয় বহন করে। আনন্দের কথা এই যে সেশনজটমুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম এবং প্রতি বছর এখানে অধিক হারে ছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি নতুন ছাত্রী হল এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি বহুতল ভবন নির্মাণসহ শিক্ষা ও গবেষণাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী তার সমাবর্তন বক্তব্যে বলেন, আমাদের জাতীয় কৃষি উন্নয়নের বুনিয়াদকে শক্তিশালী করতে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসনীয় ভূমিকা ও অবদান রেখে চলেছে। টেকসই উন্নয়নের যে লক্ষ্যমাত্রা (Sustainable Development Goals) গত বছরের শেষ দিকে জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। যার অন্যতম মূল লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন। আজকের এ সমাবর্তনে যারা আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রী লাভ করছেন, সঙ্গতভাবেই আমি আশা করছি, তারা এই Sustainable Development Goals লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন।

এবারের সমাবর্তনে এক হাজার নয়শত ঊনিশ জন স্মাতক, দুই হাজার আটশত একান্ন জন স্মাতকোত্তর ও এক শত ঊনচল্লিশ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি মোট চার হাজার নয়শত নয় জন শিক্ষার্থীকে মূল সনদ সনদ দেয়া হয়। এসময় স্মাতক পর্যায়ের ৭জন ও স্মাতকোত্তর পর্যায়ে ৮৬ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়াও ২৮ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর। এছাড়াও সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার মো. ছাইফুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের ডীন, শিক্ষক ও সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এ সমাবর্তনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: